Posts
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: রম্যরচনা
গত কয়েকদিন ধরে যখনি বৃষ্টি পড়ছে, মাঝে মাঝেই ভুলে যাওয়া স্বপ্নের মত হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলার একটা ঘটনা বার বার মনে পড়ে যাচ্ছে…প্রতি বর্ষাতেই পড়ে…আমার আর ভাইয়ের ঝুলন সাজানোর কথা। এবারো যখন মনে পড়ল, তখন ভাবলাম একেবারে ভুলে যাওয়ার আগে লিখে রাখি আমার সেই সব স্মৃতি। এইসব ভাবতে ভাবতেই, গতকাল ক্যালেন্ডারের পাতায় চোখ বোলাতে গিয়ে দেখেছিলাম আজ ঝুলনযাত্রা। ঝুলন পূর্ণিমার দিনে হয় বলে একটা ভুল ধারনা ছিল, দেখলাম আজ কিন্তু পূর্ণিমা নয়…ভুল ধারনা তো হওয়ার কথা নয়…স্পষ্ট মনে আছে ‘রাজকাহিনী’তে পড়া বাপ্পাদিত্যের সঙ্গে সেই রাজকন্যার ঝুলন উৎসবের কথা…সেট তো পূর্ণিমা রাত ই ছিল…টাইপ করা থামিয়ে উঠে গিয়ে ধুলো ঝেড়ে বার করলাম আমার সেই প্রিয় বই…আর হ্যাঁ, ঠিকই তো…অবনীন্দ্রনাথ তো সত্যি লিখেছেন পূর্ণিমার রাতে শোলাঙ্কি রাজকুমারির সাথে বাপ্পাদিত্যের ঝুলন খেলার গল্প ।…তাহলে ক্যালেন্ডার আজকের দিনটা পূর্ণিমা দেখাচ্ছে না কেন? …অতএব ভরসা গুগল!!দেখলাম অনলাইন পঞ্জিকা বলছে ৩১শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট হচ্ছে ঝুলনযাত্রা!
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: রম্যরচনা
দুগ্গা ঠাকুর ভালো
তার রূপে ভুবন আলো
লক্ষ্মী সরস্বতী
তারা সত্যি গুণবতী
দুগ্গা ঠাকুর ভালো
তার রূপে ভুবন আলো
লক্ষ্মী সরস্বতী
তারা সত্যি গুণবতী
ফুলবাবু কাত্তিক
যেন জামাইবাবু ঠিক
গনেশ দাদার ভুঁড়ি
হয় দিতে সুড়সুড়ি
বিদ্ঘুটে ওই অসুর
যেন আন্নাকালীর শ্বশুর।
না, এই ছড়া আমার লেখা নয়। এই ছড়া আমি শিখেছিলাম আমার বাবা-কাকাদের কাছে, যখন আমি তাঁদের কোলে কোলে ঘুরে দুগ্গা ঠাকুর দেখতে যেতাম। কার লেখা ছড়া , তাও জানিনা। কিন্তু ছোট্টবেলা থেকে শুনে শুনে মুখস্থ হয়ে গেছে।
একটু বড় হয়ে যখন শব্দগুলির মানে বুঝতে শিখলাম, তখন বুঝলাম এই ছড়ার বেশিরভাগ কথাগুলিই যথেষ্ট ন্যায্য। তবে যে দুটি পংক্তি সব থেকে বেশি মনের মধ্যে ঘুরত তা হল ' বিদ্ঘুটে ওই...শ্বশুর '; আন্নাকালী কে, আর অসুর কেনই বা তার শ্বশুরের মত দেখতে হতে যাবে, এই নিয়ে অনেক ভাবনা চিন্তা করেছি এক সময়ে।অনেক ভেবে ঠিক করেছিলাম, আন্নাকালী যেই হোক না কেন, অসুর কে তার শ্বশুর খেতাব দেওয়াটা আন্নাকালীর প্রতি সুবিচার হয়নি। অসুর বাপু অসুরই- সে আর কিছু হতে পারেনা।
কিন্তু প্রথম দুটি পংক্তি -
দুগ্গা ঠাকুর ভালো
তার রূপে ভুবন আলো-
এর মত সত্যি কথা বোধ হয় আর কিছু হয়না। পাঁচ থেকে পঁচাশি - সবাই এই কথায় ঘাড় কাত করবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। এই যে বর্ষা যেতে যেতেও ফিরে আসছে, তার মাঝেই হটাত হটাত করে ঝকঝকে নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মত সাদা সাদা মেঘ, সোনালি রোদ ঝিলিক দিয়ে দিয়ে উঠছে, দিঘীর জলে পদ্মফুল, বাগানের কোণ আলো করে ছড়িয়ে থাকা শিউলিফুল- এ সব দেখে অতি বড় বেরসিক ও মন বদলাবেন আর দু -দন্ডের জন্য প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে উপভোগ করবেন।আর আমি যদি বলি বাপের বাড়ি আসার আগে, শেষ বৃষ্টি্র জলে নেয়ে ধুয়ে, মুখে তুলোট মেঘের পাফ বুলিয়ে একটু সেজে নিলেন উমা,খোঁপায় জড়ালেন শিউলির মালা, হাতে নিলেন পদ্মকলি, পরণে তাঁর আসমানি রঙ জামদানি শাড়ি, যার জরি ঝলক আর সোনার আভরণের ছটা মিশে আছে শরত সকালের ঐ মিষ্টি সোনালি রোদে- তাহলে কেমন হয়?
দিনে সোনালি সূর্যালোক, রাতে পথের পাশে ঝলমল করতে থাকা আলোর মালা, আলোর তোরণ, আলোয় সাজানো মন্ডপ। দশভূজা মায়ের রূপের ছটায় সত্যিই যেন দিকবিদিক আলোক ময়। সেই আলো যেন ধুয়ে দিচ্ছে সব গ্লানি, মুছে দিচ্ছে সব কালিমা; ছড়িয়ে যাচ্ছে আনাচে-কানাচে - ফুটপাথের কোনায়- সিঁড়ির বাঁকে-ওভারব্রীজের নিচে-মেট্রোস্টেশনের ম্যুরালে-হাটে-বাজারে। ছেলে-মেয়ে সাথে নিয়ে চার দিনের জন্য বাপের বাড়ি এসেছেন উমা- এই চারদিন চাই না কোন মন খারাপ- মুখভার-দ্বেষ-কলহ। আলোকিত হোক সবার মন, আলোকিত হোক নিত্যদিনের জীবন।
লক্ষ্মী, সরস্বতী, কাত্তিক, গণেশ, আন্নাকালী আর- হ্যাঁ- এমনকি অসুর ও - এই ক'টা দিনে সবাই যেন থাকে ভাল, কারণ- দুগ্গাঠাকুর যে ভাল !
আলো জ্বালাও আলো
দুগ্গা ঠাকুর এল।
মুছিয়ে দেবে যতেক কালো
দুগ্গা বড় ভালো।
শারদীয়া প্যাপিরাস ২০১১ তে প্রকাশিত।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: রম্যরচনা
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অন্য সব অটোকে পেছনে ফেলে, দৈত্যের মত স্টেট বাস থেকে শুরু করে বেঁটেখাট মিনিবাস ( যারা একইরকম ভাবে তাড়াহুড়োয় থাকে) --- সবার বগলের তলা দিয়ে, পায়ের ফাঁকে গলে এগিয়ে যাওয়া। ভাবখানা অনেকটা 'আঠেরো বছর বয়স জানে না মানা' গোছের। কিছুতেই পরোয়া নেই, কাউকেই তোয়াক্কা নেই। জীবনে গতিই আসল। তাতে যদি পেছনের সিটে বসে থাকা রোগা পুরুষ ও মোটা মহিলাদের পেট গুলিয়ে ওঠে তো উঠুক; সামনের ডান দিকে বসা প্যাসেঞ্জারের হাঁটু, পাশ দিয়ে হুশ করে বেরিয়ে যাওয়া গাড়ির গুঁতোয় খুলে যদি যায় তো যাক!
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
( শ্রীমতী নবনীতা দেবসেনের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ ঘটেছিল হঠাৎ -ই, কাজের সূত্রে। মাত্র তিন বছর আমি নবনীতাদিকে অল্প কাছ থেকে জানার সময় বা সুযোগ পেয়েছি। এই লেখাটি ভালো-বাসা বাড়ির নবনীতাদিকে নিয়ে আমার স্মৃতিভান্ডারের খানিক অংশ, বিদুষী নবনীতা দেবসেনের কর্মকান্ডের আলোচনা বা সাহিত্যকর্মের মূল্যায়ন নয়। আজ ৭ নভেম্বর।)
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
চন্দননগরের কৃষ্ণপট্টী শেঠ লেনে আমাদের বাড়ির উল্টোদিকে ছিল সন্টুদাদা-মন্টুদাদাদের বাড়ি। সে বাড়িটা আমাদের একটেরে ,লম্বাটে, বাড়ির থেকে একেবারেই আলাদা দেখতে।দোতলা বাড়ি, সামনে পেছনে বাগান,বাগানে ঢোকার বড় গেট, বাগানের লোহার রেলিং এর বাইরে বাঁধানো লম্বা বসার রোয়াক। সেই রোয়াকে বিকেলবেলা সাদা ধুতি -পাঞ্জাবি পরে গিয়ে বসতেন আমার দাদু। সঙ্গে বসতেন ওই বাড়ির কর্তা - তাঁকেও আমরা দাদুই বলতাম। তখন নাম জানতাম না, আমার কাছে উনি সন্টু-মন্টু দাদাদের দাদু
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
গতকাল( কাগজে কলমে গত পরশু অর্থাৎ ২ রা সেপ্টেম্বর ২০১৯) অনেক অনেক দিন পরে, হঠাৎ করে রাত পৌনে বারোটার নাগাদ লোডশেডিং হল। হ্যাঁ, আমরা তো লোডশেডিং-ই বলি। ছোটবেলার অভ্যাস। তখন সারাদিনে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়া এবং আসাটা নিয়ম ছিল।আর সেই আসা-যাওয়ার গল্পের ‘এক- কথায়- প্রকাশ- করো’ নাম ছিল ‘লোডশেডিং’ । বেশ কিছুবার এমনও গেছে যখন দিন দুয়েক টানা বিদ্যুৎ সংযোগ থাকেনি। না, সেই সময়ে ঝড়-বৃষ্টি-সাইক্লোন-বন্যা কিছুই হয়নি। তবুও আমরা সেই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছি। পরে কলকাতা শহরে এসেও লোডশেডিং -এর মুখোমুখি হয়েছি কয়েকবার।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
(এই গদ্যটি আমার লেখার কথা নয়, দরকার ও ছিল না। একজন কিঞ্চিৎ দাবী জানালো বলে, ভাবলাম লিখি। এই গদ্যের শিরোনাম হতে পারে 'একটা শাড়ির গল্প', কিংবা 'কয়েকটা রঙের গল্প'; কিংবা 'কয়েকটা ছেঁড়া ছেঁড়া ভাবনা'। নাহলেও ক্ষতি নেই। সব কিছুই যে নিয়ম মেনে হতে নেই, সে আর কে না জানে?)
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
কলকেতা শহরে বর্ষা নাকি এসে গেছে, কিংবা আসছে, কিংবা এল বলে ! আবহাওয়া অফিস নাকি তেমনই বলেছিল । এমনিতে অবশ্য বোঝার উপায় নাই, জ্যৈষ্ঠের এই শেষ কয়দিন এক্কেরে ঠেসে ধরে নিঃশ্বাস বের করে নেওয়ার উপক্রম হয়েছে। সেই হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলায়, বর্ষা এসে গেছে ব্যাপারটা বেশ বুঝতে পারতাম, যখন একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখতাম সারা আকাশ কীরকম হালকা ছাই ছাই রঙের জলে ভরা ভরা মেঘে ছেয়ে গেছে; বাতাসে সোঁদা গন্ধ; ভেজা ভেজা ভাব চারদিকে; গাছপালার পাতাগুলোর ওপর থেকে লাল ধুলোর পরত ধুয়ে গিয়ে কেমন চকচকে নানা মাত্রার সবুজ দেখা যাচ্ছে। আজকের ধোঁয়া- ধুলোয় ভরা কলকাতায় সেরকম দৃশ্য যদি কোনোওবছরে হঠাৎ করে একদিন দেখতে পাই, তাহলে ধরে নিই ওটা ভুল করে হয়ে গেছে ! কলকাতার বর্ষা নিয়ে আমার কোনোও রোমান্টিসজম নেই।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
বহুদিন পর ঝড় বৃষ্টির কারণে, বেশ দেরী করে, মওকাবাজ অটোচালককে স্বাভাবিকের দ্বিগুনের বেশি ভাড়া দিয়ে বাড়ি ফিরলাম। পাড়ার সব দোকানপাটই তখন প্রায় বন্ধ। একটি সদ্য প্রতিষ্ঠিত ঝাঁচকচককে দোকানে ঝলমলে আলোর নিচে দুই বিশাল লাল কাপড় ঢাকা হাঁড়ি, আর হাঁড়িদুটির পেছনে অনুরূপ মুখে দুটি মানুষ...অবশ্যই অনন্তের অপেক্ষায় বসে! বাঙালির ন্যাশনাল ফুডের গন্ধের সাথে মিলে মিশে গেছে সোঁদা বাতাসের সুবাস। পাড়ার সব্জিবিক্রেতা ছেলেটির ভ্যানের ওপর সদ্যস্নাত কলমী, নটে, পুঁই, পাট এলিয়ে পড়ে হ্যালোজেনের চড়া আলোয় চকচকে শরীর শুকোচ্ছে।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
হেঁটমুন্ড বাদুরের মত মিলের রংচঙে ফুল-ছাপ-তোলা প্রত্যঙ্গবিহীন নিস্পৃহ রাতপোষাকগুলি হাওয়ায় দোলে;
প্রাচীন এবং দুর্মূল্য আইভরির মত হলদেটে অন্তর্বাস, ফ্যাকাসে গামছার আড়ালে নিভৃতি খোঁজে;
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
পুজোর স্মৃতি নিয়ে লিখতে বা কথা বলতে বসলে অবশ্যই ফিরে ফিরে আসবে নানা রং-গন্ধ-বর্ণ-স্বাদের স্মৃতি। ছুটিতে বেড়ানো, ফ্যাশন, সাজসজ্জা, আত্মীয়বন্ধুদের গপ্পোর সাথে সাথে অবশ্যই আসবে খাওয়া-দাওয়ার কথা, এ আর এমন কি? আমাদের প্রত্যেকেরই ফেলে আসা দিনের পুজোর স্মৃতির সাথে জড়িয়ে আছে এইরকম নানা ধরণের স্মৃতি। আমারও আছে; তার মধ্যে খাবার-দাবারের স্মৃতি বেশ ভালই জায়গা নিয়ে আছে, কারণ সেগুলির সাথে জড়িয়ে আছে আরো নানা টুকরো আনন্দ আর মন-কেমন করা স্মৃতি।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
অবশেষে সেইদিন আসন্ন। আজ, শনিবার, ৩০শে এপ্রিল, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের শেষ দফায় ভোটের দিন। কাজের মেয়ে দুইদিনের ( আসলে চারদিনের )ছুটি নিয়েছে।
আবাসনের ঝাড়ুদার 'মেসো'-ও বলেছে দুইদিন আসবে না। আর কে কে আজ আগামি কাল আর পরশু আসবে না কে জানে ! বৃষ্টি যে আসবে না সেটাই মনে হয় একমাত্র নিশ্চিত আছে। বেশ একটা ছুটি ছুটি ভাব। মাংস এবং মদের দোকানে গত দিন কয়েক বেজায় বিক্রিবাটা। এদিক সেদিক লাল-নীল-কমলা-সবুজ-সাদা নানারঙের কাপড়ে মোড়া ছোট ছোট বুথ। রঙিন পতাকা।সকাল থেকে চারিদিক কি অসম্ভব নিস্তব্ধ। রাস্তায় গাড়ি ঘোড়া নেই। লোকজন ও অনেক কম। দোকান বাজার বন্ধ। এদিক সেদিক মাঝেমধ্যে হালকা করে টিভির আওয়াজ শুধু।
হাল্লা চলেছে যুদ্ধে।
কিন্তু আমার বড় সমস্যা। কেন, সেটাই সবিস্তারে বলা দরকার।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
আমার কাছে আজকাল আর চিঠি আসেনা। চিঠি মানে কাগজে লেখা চিঠি। যে চিঠি নিয়ে আসার কথা ডাকপিওনের। ডাকে আসে শুধু ইলেকট্রিক বিল, টেলিফোন বিল, ক্রেডিট কার্ড বিল, ফর্ম, অ্যাপ্লিকেশন এইসব। কালে-কস্মিনে এক দুটো বিয়ে বাড়ির নিমন্ত্রনের চিঠি। শুধু আমার কাছে কেন, কারোর কাছেই মনে হয় আসেনা। জীবন থেকে ক্রিম রঙা পোস্টকার্ড আর নীল রঙা ইনল্যান্ড কাগজ হারিয়ে গেছে। রঙিন ফুল ছাপ রাইটিং প্যাড আর লাল হৃদয়-চিহ্ন আঁকা রংচঙে খাম কিনিনি বহুদিন। আমিও কাউকে চিঠি লিখিনা। আমাকেও কেউ চিঠি লেখে না।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
গতকাল , ২৪শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যাবেলায় সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সুথল পথিকৃৎ সম্মান ২০১৫ এর অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ হয়েছিল। বোরোলিন, সুথল এবং আরো অন্যান্য নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী প্রস্তুতকারি সংস্থা জি ডি ফার্মাসিউটিক্যাল্স্ এর এই উদ্যোগের পিছনে উদ্দেশ্য- আমাদের এই আপাত বিপর্যস্ত সমাজের মধ্যে থেকেই যে সব মানুষ সবার চোখের আড়ালে, মানুষের সার্বিক উন্নতির পথে নিরলস কাজ করে চলেছেন, তাঁদের সম্মানিত করা, এবং পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসা-আরো একবার। গতকালের অনুষ্ঠানে সম্মানিত করা হল তিনজন এমনই মানুষকে
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
গতকাল দুপুরে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে গেছিলাম , সেখানে গত মাসখানেক ধরে চলছিল অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা ছবির এক প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি এই সপ্তাহেই শেষ অবশ্য। ওবিন ঠাকুর, ছবি কেমন করে লিখতেন দেখার সুযোগ পেলাম। আমি শিল্প বিশেষজ্ঞ নই, তাঁর শিল্পকর্ম বিষয়ে খুব কিছু পড়াশোনাও নেই। যেটুকু বুঝলাম, নানা ধরণের মাধ্যমে, বিশেষতঃ, জল রঙে তাঁর অবাধ স্বাচ্ছন্দ্য ছিল, এবং নানা ধরণের ছবি আঁকার শৈলী তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রয়োগ করেছিলেন।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। দুপুরবেলা টিভিতে একটি সংবাদ চ্যানেলে এক সেলেব্রিটির বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর ব্যবস্থাপনা নিয়ে বাইট দিচ্ছিল। অভিনেত্রী লাল পেড়ে শাড়ি এবং প্রচুর সোনার গয়না পরে আলপনা দিচ্ছেন, এবং রাতে বাড়ির পুজোর ভোগের ফিরিস্তি দিচ্ছেন। দেখতে দেখতে ভাই বলল - আজকাল কি সবকিছু নিয়েই প্রবল হইচই হয়...এই দুর্গাপুজো গেল...আগে দুর্গাপুজোর পরে কিরকম মন খারাপ হয়ে থাকত কতদিন, আজকাল কি মন খারাপও করেনা কারোর...?
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
প্রত্যেক বছর ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। সোমবার বা শুক্রবারে পড়লে কেউ কেউ উইক-এন্ডের সাথে জুড়ে নিয়ে ছোটখাট ট্রিপ মেরে আসেন। কেউ কেউ সকাল সকাল মাংস কিনে বাড়ি ফেরেন। কোন কোন স্কুলে পতাকা উত্তোলন হয়, প্যারেড হয়। কারোর কারোর ছুটি থাকে। আমাদের স্কুলের প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন খুব ভাল করে মনে আছে, কিন্তু স্বাধীনতা দিবসে কি হত ভুলে গেছি। স্কুলে যেতে হত বোধ হয়। কেন এত তাড়াতাড়ি এই তথ্য ভুলে গেলাম কে জানে।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: পাঁচমিশালি
মহালয়ার ভোরবেলা অ্যালার্ম বাজিয়ে চারটের সময় ঘুম থেকে উঠে, ধূপ জ্বালিয়ে, ল্যাপটপ খুলে মহিষাসুরমর্দিনীর সিডি চালিয়ে দিলাম। প্রত্যেক বছরের মতই ভাবলাম, এইবার পুরো অনুষ্ঠান শুরু থেকে শেষ অবধি শুনবো। আমার সিডি টা ভিডিও সিডি। তাতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় যখন উদাত্ত স্বরে শোনা যায় "যা দেবি সর্ব্বভূতেষূ --- " তখন স্ক্রিনের ওপর পাটের চুল দাড়ি লাগানো বরষীয়ান অভিনেতা মনু মুখার্জীকে দেখা যায় চট দিয়ে তৈরি স্টুডিওর কুঁড়ে ঘরে বসে সেই বজ্রগম্ভীর কন্ঠের লিপ দিচ্ছেন। মাঝে মাঝে নীল আকাশ, কাশ ফুল, দুর্গার মুখ, নৃত্যরতা মহিলা, লালপেড়ে শাড়ী পরা বাঙালিনী --- আমার ভালো লাগে না। কিরকম যেন মনে হয় একটা অপার্থিব ঘটনাকে জোর করে টেনে নামিয়ে আনা হচ্ছে। 'মহিসাষুরমর্দিনী' দেখার নয়, শোনার, অনুভব করার ---অন্ধকার ঘরে বালিশ আঁকড়ে বিছানায় শুয়ে নিজের অজান্তেই রোমাঞ্চিত হওয়ার --- এক বিশেষ অভিজ্ঞতা।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: এই সময়, এই জীবন
ফেলে আসা শীতে, একটা ছোট্ট টবে, একমুঠো সর্ষে ছড়িয়েছিলাম। জানুয়ারির শেষে, যখন স্থান সংকুলান না হওয়ায় গাছগুলি ছোটখাটো চেহারা নিয়েই বুড়ো হয়ে যেতে লাগল, তখন তাদের পাতা তুলে শাক করে খেলাম আর গুটিকয় ফুল সাজিয়ে রাখলাম ছোট্ট এক চীনেমাটির কাপে। সে ছিল জানুয়ারি মাসের শেষ। গত এক মাস ধরে, সেই জলের মধ্যে থেকেই, সেইসব সূক্ষ্ম কিন্তু সবল ডালগুলি শিকড় বের করেছে, ফুলগুলিকে ফলে পরিণত করেছে, সেই নখের থেকেও সরু ফল পরিপুষ্ট হয়ে উঠেছে,
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: এই সময়, এই জীবন
রাশিয়া কেন ইউক্রেনকে আক্রমণ করল, সেই নিয়ে দিন দুয়েক আগে ইউটিউবে নানা খবর দেখছিলাম। এক জায়গাতে শুনলাম বলছে 'Euromaidan' ...'maidan' শুনে কৌতূহল হল। একটু নেট ঘাঁটলাম। জানলাম ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এর মাঝে রয়েছে এক বড় স্কোয়্যার। তার নাম Maidan Nezalezhnosti আক্ষরিক অর্থে "Independence Square"। এই জায়গাটা স্থানীয় মানুষদের কাছে maidan নামেই পরিচিত ।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: এই সময়, এই জীবন
গত মঙ্গলবার প্রথমবার কেওড়াতলা গেলাম। এই নিয়ে চারবার যাওয়া হল --- প্রতিবারই বিভিন্ন শ্বশান --- গড়িয়া, বৈদ্যবাটি, রাজপুর, কেওড়াতলা। বিভিন্ন চেহারা, বিভিন্ন অবস্থান, বিভিন্ন চরিত্রের হলেও, পরিষেবা এক। মাঝরাতের কথা অবশ্য জানিনা, কিন্তু ছোটবেলায় এবং বড়বেলায় পড়া কিছু 'ভয়াবহ' গল্পে যেসব গা ছমছম করা শ্বশানের বিবরণ থাকত--- মহানগরের মধ্যে, ঘোর বড়রাস্তার পাশে অবস্থিত এই সমস্ত শ্মশানে দিনে দুপুরে তো দূর, ভর সন্ধ্যাবেলাতেও অন্তত তেমন কিছুই মনে হওয়ার উপায় নেই ।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: এই সময়, এই জীবন
আমাদের সেই একেবারে ছোট্টবেলায়, এক একটা গ্রীষ্মকালীন রবিবার আলাদা হত। সকালবেলার পড়াশোনা আর রেডিওতে 'শিশুমহল' শোনা হয়ে গেলে, ছুটি ছুটি মেজাজ হত। বাবা বাজার থেকে ফিরে আসতেন বিজলীগ্রীলের চারটে ছোট মাপের বোতল নিয়ে। সেটা বোধ হয় ছিল সোডা ওয়াটার। আমাদের বাড়িতে অন্য যাবতীয় রঙিন, এরিয়েটেড পানীয় নিষিদ্ধ ছিল। এইটা সাদা এবং বাঙালি বলেই বোধ হয় কালেভদ্রে, মানে গ্রীষ্মকালে মাসে হয়ত একবার ঢুকত। বাইরে ততক্ষণে দিনের তাপমাত্রা বেড়ে শোঁ শোঁ লু বইতে শুরু করেছে। আমাদের দেশলাইবাক্সের মত ছোট্ট কোয়ার্টারের গুটিকয় জানলা বন্ধ করে দেওয়া হত গরম এড়াতে।
- Details
- Written by: Mahasweta
- Category: এই সময়, এই জীবন
হিন্দুস্থান কেব্ল্স্ হাই স্কুলের কাজ থেকে বাবা অবসর নেন ২০০০ সাল নাগাদ। বাবা কিছুদিন পরে ঠিক করলেন কম্পিউটার শিখবেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমনস্ক মানুষ হিসাবে এই যন্ত্রটি সম্পর্কে বাবার স্বাভাবিকভাবেই ঔৎসুক্য ছিল। তাঁদের কর্মজীবনকালে নানাবিধ কারণে এই রাজ্যে কম্পিউটার আসতে আসতেও আসেনি, সেটা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে দুঃখিত ছিলেন।