আমাদের সেই একেবারে ছোট্টবেলায়, এক একটা গ্রীষ্মকালীন রবিবার আলাদা হত। সকালবেলার পড়াশোনা আর রেডিওতে 'শিশুমহল' শোনা হয়ে গেলে, ছুটি ছুটি মেজাজ হত। বাবা বাজার থেকে ফিরে আসতেন বিজলীগ্রীলের চারটে ছোট মাপের বোতল নিয়ে। সেটা বোধ হয় ছিল সোডা ওয়াটার। আমাদের বাড়িতে অন্য যাবতীয় রঙিন, এরিয়েটেড পানীয় নিষিদ্ধ ছিল। এইটা সাদা এবং বাঙালি বলেই বোধ হয় কালেভদ্রে, মানে গ্রীষ্মকালে মাসে হয়ত একবার ঢুকত। বাইরে ততক্ষণে দিনের তাপমাত্রা বেড়ে শোঁ শোঁ লু বইতে শুরু করেছে। আমাদের দেশলাইবাক্সের মত ছোট্ট কোয়ার্টারের গুটিকয় জানলা বন্ধ করে দেওয়া হত গরম এড়াতে। ওদিকে রান্নাঘরে তখন হয়ত মা মাংস রান্না করতেন - আমার মাছ বা মাংসে প্রাথমিকভাবেই অনীহা বলে অন্য অনেকের মত রবিবারের দুপুরের রান্না হতে থাকা মাংসের ঝোল বাটিতে নিয়ে চেখে দেখার স্মৃতি তেমন নেই। বরং শীত সন্ধ্যের মুড়ির মোয়া আর জিবেগজা তৈরির সময়ে চেখে দেখার স্মৃতি আছে। সেটা অন্য গল্প। সেই গনগনে রোববারের দুপুরে আমাদের পারিবারিক 'মি-টাইম' বা 'আস- টাইম' এর সঙ্গী হত বাবার প্রিয় ন্যাশ্‌নাল প্যানাসনিকের টেপ রেকর্ডার আর কতগুলি ক্যাসেট। কোনোদিন আমরা নিজেদের কথা, আবৃত্তি রেকর্ড করতাম, কোনোদিন পুরনো রেকর্ড করা নিজেদের, আত্মীয়দের কথা শুনতাম, কিংবা অন্যান্য নানা ক্যাসেট বাজিয়ে শুনতাম। আমরা বিশেষ করে আমি, শুধুই শুনতাম, ভুলেও টেপ রেকর্ডার ধরে চালানোর চেষ্টা করতাম না। এক তো বাবার ভয়ে, আর দুই, আমার ধারনা ছিল যেহেতু ওটা যন্ত্র, তাই আমি ধরলেই ওটার বারোটা বাজবে এবং তারপরেই ওই এক নম্বর কারণ আবার ফিরে আসত। ভাই বরং একটু বড় হয়ে এইসব বিপজ্জনক, বিপ্লবী কাজকর্ম অনেক করেছে- বাবার টেপ রেকর্ডার ঘাঁটা, বাবার ক্যামেরা আলমারি থেকে নিঃশব্দে বার করে আমার দুটো ছবি তুলে আবার রেখে দেওয়া...।

বাবার সঙ্গে ওইসব ক্যাসেট শুনে শুনেই চিনেছিলাম বহু সঙ্গীতশিল্পীকে; চিনেছিলাম ভি জি যোগের মত প্রবাদপ্রতিম বেহালাবাদক; ভি বালসারার মত সঙ্গীত আয়োজক এবং শিল্পীকে। ভি বালসারার ক্যাসেটগুলি আমার খুব পছন্দের ছিল। ক্যাসেটের বাক্সের ভেতরের কাগজের কভারে খুদে খুদে অক্ষরে লেখা নানারকমের বাদ্যযন্ত্রের নাম চিনে মনে মনে কল্পনা করতাম ওপরের হাসি হাসি মুখ বয়স্ক মানুষটাকে- ওরে বাবা...এটাও বাজাতে পারেন; ওটাও বাজাতে পারেন; ততদিনে বাঙালি মধ্যবিত্ত বাড়ির নিয়ম মেনে গান শেখার ক্লাসে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু একে গলায় সেপটিক টন্সিলের জন্য ব্যথা এবং তার জন্য ভাঙা মোটা গলা , আর অন্যদিকে ক্লাসিকালের রেওয়াজ - দুই-ই বেশ অমনোমত হওয়ায়, এই মানুষটা দিব্যি এত যন্ত্র বাজিয়ে কেমন সব সুন্দর সুন্দর সুর বাজান শুনেই বেশি ভালো লাগত বোধহয়।

তবে আমার, এবং বোধহয় আমাদের সবারই, সবথেকে পছন্দের ক্যাসেট ছিল 'ক্যালকাটা ইউথ কয়্যার'-এর গানে ভরা ক্যাসেটটা। ওটা একটা কাস্টমাইজড ক্যাসেট ছিল, মানে একটা লম্বা দৈর্ঘ্যের ফাঁকা ক্যাসেটের দুইদিকে,  ইউথ কয়্যার-এর অনেকগুলো গান রেকর্ড করা ছিল - হয়ত দুটো বা তিনটে অ্যালবাম-এর গান। বাবাকে অমন একটা ক্যাসেট কে বানিয়ে দিয়েছিল জিজ্ঞেস করা হয়নি; হয়ত বাবার ছাত্র রাজকুমারদাদা, কারণ রাজকুমারদাদার একখানা ক্যাসেটের দোকান ছিল বহুদিন। ক্যাসেটের বাক্সটার ওপরে সাদা কাগজে বাবার-ই হাতের লেখায় লেখা ছিল গান গুলির নাম। ওটা ছাড়াও 'ক্যালকাটা ইউথ কয়্যার'-এর আলাদা আরও একটা বা দুটো ক্যাসেট ছিল বাবার সংগ্রহে। 

ওই ক্যাসেটটা ছিল এক আকাশ আলোর মত, ঝড়ের খবর আনা শীতল বাতাসের মত, ঝমঝমিয়ে শুকনো মাটি ভিজিয়ে দেওয়া প্রথম বৃষ্টির  মত। ওই ক্যাসেটটা আমাকে রুমা গুহঠাকুরতাকে চিনিয়েছিল। আর রুমা গুহঠাকুরতা আমাকে কিউবা নামের একটা অচেনা দেশকে চিনিয়েছিলেন।

কয়েকদিন আগে কোনো এক অনলাইন প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা ছিল - ভারতীয় গণসঙ্গীতের ফার্স্ট লেডি রুমা গুহঠাকুরতা। আমার ক্লাস টু বা থ্রিতে, যখন আমি ক্যালকাটা ইউথ কয়্যারের গান শুনছি, তখন রুমা গুহঠাকুরতা নামটা শুধু পড়তে শিখেছিলাম, মুখটা চিনতাম না, কারণ 'ক্যালকাটা ইউথ কয়্যার'-এর ক্যাসেটের গায়ে আদৌ কোনো ছবি থাকলে সেটা পুরো কয়্যারের ছবি থাকত হয়ত। সেটাতে আলাদা করে কাউকে চেনা মুশকিল। ওঁকে আমি চিনেছি পরে টিভিতে অনুষ্ঠান দেখে, বা খবরের কাগজে ছবি দেখে, সিনেমার অভিনয় দেখে। গানের মধ্যে দিয়ে শুধ ওঁর গলাটাকেই চিনতাম। সে এক ভারী অন্যরকম গলা মনে হত তখন -  অন্য সকলের থেকে একেবারে আলাদা।মিহি মিষ্টি ও না, ভারী গম্ভীর ও না - কেমন যেন মাঝামাঝি, আলাদা রকমের। কিন্তু সেই গলার জোর আর তেজ ঠিক বোঝা যেত সমবেত গানগুলোর মাঝেও।

আমাদের শুনে শুনে মুখস্থ হয়ে গেছিল - 'বল বল বল সবে', ' আজ যত যুদ্ধবাজ দেয় হানা হামলাবাজ', 'ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম','জাগো অনশন বন্দী' - এমন কত গান। বামপন্থার রমরমে সময়কালে, শিল্পনগরীতে বড় হয়ে ওঠার কারণে প্রতিনিয়ত নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এমন ধারার অন্যান্য গান শুনেও হয়ত এই গানগুলোকে খুব চেনা লাগত। পল রোবসন কে না চিনেও আমি আর ভাই জোরে জোরে গেয়ে ফেলতাম 'ওরা জীবনের গান গাইতে দেয় না, শিল্পী সংগ্রামী পল রোবসন/ আমরা তোমারই গান গাই, ওরা চায় না।' - ওই গানটা আমাদের খুব খুব পছন্দের গান ছিল।

তবে ক্যালকাটা ইউথ কয়্যারের যে গান দুটো আমার সবথেকে পছন্দের ছিল, সে দুটি ছিল 'অপরূপা দ্বীপ' আর 'এবনি আর আইভরি'। এই গান দুটিই হয়ত সেভাবে খুব জনপ্রিয়ও নয়। বহু বহু বছর পরে, ইন্টারনেট নামক অত্যাশ্চর্য প্রযুক্তিটি আমাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করল এই দুটি গানের মূল স্প্যানিশ এবং ইংরেজি গান দুটিকে।

ওই যে শুরুর দিকে লিখলাম, রুমা গুহঠাকুরতা আমাকে 'কিউবা' নামের দেশটাকে চিনিয়েছিলেন, সে ওই 'অপরূপা দ্বীপ গানের মধ্যে দিয়েই'। এই গানটা অন্যান্য গানগুলির তুলনায় অনেক ধীর লয়ের, এবং সঙ্গতের বাজনাও খুব কম। গানের শুরুতে রুমা মুখে মুখে হোসে মার্তের নামক কিউবার সেই কিশোর স্বাধীনতা সংগ্রামীর গল্প বলেন, যাঁকে দেশান্তরী হতে হয়েছিল,এবং পরে এক সময়ে যাঁর লেখা গান হয়ে উঠেছিল বিভিন্ন প্রতিবাদ আন্দোলনের অংশ । তারপরে শুরু হত গানঃ

অপরূপা দ্বীপ/ যেন সে সাগরের টিপ/ কবিতার মত, আহামরি স্বদেশ আমার ...
এই প্রথম স্তবক এককভাবে গেয়ে রুমা বলে উঠতেন - 'আপনারাও গান'... গেয়ে উঠতেন কোরাস... আমার গায়ে কাঁটা দিত, মনে হত আমাকেও বলা হচ্ছে গাইতে। 

এই অদ্ভূত সুন্দর গানটা শুনতে শুনতে আমি পুরোটা বুঝতাম না অবশ্যই, কিন্তু বইতে আঁকা ছবির মত  সমুদ্র, বালুকাবেলা, পাহাড়ি ঝর্ণার ছবি মনে উঁকি দিয়ে যেত। বুঝতে পারতাম, এই গানটা একেবারেই আলাদা, খুব মন খারাপের গান। আর ওই কিউবা নামটা মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল। কিছুদিন পরে বাড়িতে টিভি এলে,মাঝেমধ্যে খবরে 'ফিদেল কাস্ত্রো' নামটা উঠে এলে আমার এই গানটা মনে পড়ত, কল্পনার নীল সমুদ্র আর পাহাড়ি ঝর্ণা মনে পড়ত, ইয়ুথ কয়্যারকে মনে পড়ত। কিন্তু সত্যিই এই গানটা আমি কোনো টিভি অনুষ্ঠানে শুনিনি, বা আমাদের ছোটবেলায় যেমন নিয়ম ছিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলেই গণসঙ্গীত বাজানো হবে, সেখানেও শুনিনি। বাবার ওই ক্যাসেট ছাড়া এই গানটার যেন কোনো অস্তিত্বই ছিল না। সময়ের স্রোতে সেই টেপ রেকর্ডার খারাপ হল, ক্যাসেট শোনার অভ্যাস চলে গেল, 'অপরূপা দ্বীপ' ও হারিয়ে  গেছিল।

গানটিকে বছর কয়েক আগে ইউটিউবে খুঁজে পেল আমার ভাই। আর নতুন করে এই গান নিয়ে ভাবার আর গানের উৎস খুঁজতে গিয়ে 'গুয়ান্তানামেরা' খুঁজে পেতাম না যদি না স্প্যানিশ অনুবাদক বন্ধু জয়া চৌধুরী কোনো একদিন হোসে মার্তেকে নিয়ে একটা পোস্ট করতেন। ইউটিউব বলছে ১৯৭২ সালে রেকর্ড হয়েছিল কয়্যারের এই গানটি। আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে অনুবাদ আর রেকর্ড করা এই গান, আজও খুব প্রাসঙ্গিক মনে হয় । 'দেশকে ভালোবাসার অপরাধে অপরাধী' হয়ে আজও যে কত মানুষ দেশান্তরী বা জেলে বন্দী!

'এবনি আর আইভরি' গানটা শুনে বহুদিন অবধি আমি ভাবতাম এটা দুই ভাই-বোনকে নিয়ে গান, যাদের নাম এবনি আর আইভরি,নইলে তারা একসাথে পিয়ানোয় সুর তুলবে কী করে? কিছুদিন পরে , এবনি আর আইভরি শব্দদুটির সঙ্গে দুটি রঙের সম্পর্ক খুঁজে পেয়ে, ধরে নিলাম একটি কৃষ্ণাঙ্গ আর একটি শ্বেতাঙ্গ বালিকা এক সঙ্গে বসে পিয়ানো বাজায় (বালক ভাবার চেষ্টাই করিনি কোনোদিন! )। ভেবে বেশ আনন্দ হল। মনে হল বাহ- বেশ বর্ণবৈষম্য বিরোধী গান তো!

এবনি আর আইভরি
একসাথে রয় পিয়ানোর সুর তুলি পাশাপাশি
হে প্রভু, আমরাও এ কাজ পারব না কী?
আমরা তো জানি, যে মানুষ সবাই সমান তুমি যেখানে যাও
আছে ভালো মন্দ, সবারই মাঝে
আমরা বুঝতে চাই
শিখতে চাই আমরা সবার সাথে
বাঁচতে চাই সবাইকে নিয়ে...

 

মাত্র, মাত্র কয়েকদিন আগে আবার সেই ইন্টারনেট খুঁজে বুঝলাম, এবনি আর আইভরি বর্ণবৈষম্য বিরোধী গান তো বটেই , তবে এই গানের মধ্যে খানিক পিয়ানো যন্ত্রটার গল্প ও আছে। এবনি আর আইভরি বলছে পিয়ানোর কালো আর সাদা চাবিগুলির কথা। কালো গুলি এবনি কাঠের তৈরি হত বা হয়, আর সাদাগুলি আইভরি বা হাতির দাঁতের তৈরি হত। এখন নাকি বেশিরভাগ পিয়ানোর সাদা চাবিগুলি বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়,নইলে মনুষ্যপ্রজাতির যা অভ্যাস, হয়ত পিয়ানো বাজানোর তাগিদে দুনিয়ার যাবতীয় হাতিকে এতদিনে মেরেই ফেলত।

সময়ের স্রোতে এইরকম সমস্ত গান জায়গা ছেড়ে দিয়েছে নতুন ধারার, নতুন সময়ের গানেদের। সেইসমস্ত ধারার নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা ছিল এবং আছে। আমাদের হাই স্কুল কলেজবেলায় মাতিয়ে রাখত বাংলা ব্যান্ড, মাতিয়ে রাখতেন সুমন-নচিকেতা-অঞ্জন। এই মূহুর্তের কিশোর -কিশোরীরা 'বি টি এস' নামের এক কোরিয়ান ব্যান্ড-এর ভক্ত। কেন, সেটা বোঝার জন্য আমিও এক দুটো বি টি এস এর গান শুনলাম। উইকিপিডিয়া জানাল, বহুদিন পরে নাকি আন্তর্জাতিকভাবে এত জনপ্রিয় হয়েছে কোনো একটি ব্যান্ড। জানলাম তাদের গানের মধ্যে দিয়ে তারা এই সময়ের কিশোর-কিশোরীদের নানারকমের সমস্যার কথা তুলে ধরে। তাদের জনপ্রিয়তা এবং গানের সামাজিক প্রভাবের কারণে তারা এমন কি রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভাতেও দুইবার অংশগ্রহণ করেছে এবং ইউনিসেফের সঙ্গে 'Love Myself' ক্যাম্পেন শুরু করেছে, যেটা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের মূলতঃ যেকোনো রকমের হিংসা, হানাহানির ভয় কাটাতে এবং নিজেদের ভালোবাসতে অনুপ্রাণিত করবে। এইসব জেনে টেনে ঠিক করেছি, আমিও মন দিয়ে বিটিএস শোনার চেষ্টা করব।

ইদানীং ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জীবনে আমাদের সামগ্রিক পছন্দ বা সাংস্কৃতিক যূথবদ্ধতা প্রায় নেই বললেই চলে। এক ঘরে পাশাপাশি বসে কানে ইয়ারপ্লাগ গুঁজে নিজের নিজের স্মার্টফোন বা ট্যাবে আলাদা গান শুনি বা আলাদা ছবি দেখি। আমার মনে হয়, আমাদের জীবনে 'গণসঙ্গীত'-এর পুনরাবির্ভাব হওয়া দরকার । নতুন মোড়কে চিরকালীন ভাবনার গান আরও তৈরি হওয়া দরকার। 'অপরূপা দ্বীপ' আর 'এবনি আর আইভরি'-এর মত অন্য দেশের, অন্য ভাষার গান অনুবাদ হওয়া দরকার। হয়ত তেমন কাজ হয় ও, কিন্তু সীমিত থেকে যায় সঠিক প্রচারের অভাবে। এইসব গান ঘুরে ফিরে আমাদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাজা দরকার। আকাশবাণী এবং দূরদর্শনে এমন গানের অনুষ্ঠান আজও সম্প্রচারিত হয় কিনা আমি জানিনা অবশ্য। হয়ে থাকলেও বিভিন্ন কেব্‌ল্‌ চ্যানেলের দিকে চোখ থাকায় আমরা সেসবের খেয়াল রাখি না। হয়ত নতুন সাংস্কৃতিক এবং বিনোদন মাধ্যমগুলির মারফত এমন গান গুলি আবার ফিরে আসা দরকার আমাদের জীবনে। মানুষের ভালো থাকার, মানুষকে ভালো রাখার কথা বলে যে গান, সেই গানের আবেদন এবং প্রয়োজন যে চিরকালীন, দুঃসময়ে যে সেই গান মানসিক জোর বাড়ায়, আস্থার প্রলেপ লাগায়--- তার প্রমাণ দুই বছর আগে সি এ এ বিরোধী আন্দোলনের সময়ে, চার দশক আগে প্রকাশিত 'হম দেখেঙ্গে' - এই উর্দু নজ্‌ম্‌টির জনপ্রিয়তা ফিরে আসা।

তবে হ্যাঁ --- তাই বলে জীবনে 'গণসঙ্গীত' ফিরিয়ে আনার জন্য 'মোহর'-এর মত বাসরঘরে 'পথে এবার নামো সাথী পথে হবে এপথ চেনা' শুনতে চাইনা।

যাঁরা এই আগের বাক্যের অর্থ একবারে বুঝে উঠতে পারেন নি, তাঁরা নিজেদের সৌভাগ্যবান/ সৌভাগ্যবতী মনে করুন।

 

নীচে দিলাম ক্যালকাটা ইউথ কয়্যারের সেই গান - 'অপরূপা দ্বীপ' - যেটা শুনলেই আমার সেই ছোট্টবেলার গরমের দুপুরগুলো মনে পড়ে যায়।
https://www.youtube.com/watch?v=UzgC4yAdJ_c