কলকেতা শহরে বর্ষা নাকি এসে গেছে, কিংবা আসছে, কিংবা এল বলে ! আবহাওয়া অফিস নাকি তেমনই বলেছিল । এমনিতে অবশ্য বোঝার উপায় নাই, জ্যৈষ্ঠের এই শেষ কয়দিন এক্কেরে ঠেসে ধরে নিঃশ্বাস বের করে নেওয়ার উপক্রম হয়েছে। সেই হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলায়, বর্ষা এসে গেছে ব্যাপারটা বেশ বুঝতে পারতাম, যখন একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখতাম সারা আকাশ কীরকম হালকা ছাই ছাই রঙের জলে ভরা ভরা মেঘে ছেয়ে গেছে; বাতাসে সোঁদা গন্ধ; ভেজা ভেজা ভাব চারদিকে; গাছপালার পাতাগুলোর ওপর থেকে লাল ধুলোর পরত ধুয়ে গিয়ে কেমন চকচকে নানা মাত্রার সবুজ দেখা যাচ্ছে। আজকের ধোঁয়া- ধুলোয় ভরা কলকাতায় সেরকম দৃশ্য যদি কোনোওবছরে হঠাৎ করে একদিন দেখতে পাই, তাহলে ধরে নিই ওটা ভুল করে হয়ে গেছে ! কলকাতার বর্ষা নিয়ে আমার কোনোও রোমান্টিসজম নেই। এই অবধি পড়ে খাস কলকাত্তাইরা আমাকে দলবেঁধে ট্রোল করবেন কি না, সেটা ভাবতেই পারেন, কিন্তু সত্যি কথা হল, এই নোংরা , কালো, ময়লা জমা জলে পা ডোবাতে হলে তার মধ্যে আমি রোমান্স খুঁজে পাই না। এ হত আমাদের রূপনারায়ণপুর -চিত্তরঞ্জন - সেখানে বৃষ্টির মজাই আলাদা, বৃষ্টি হলে সব কিছু ধুয়ে মুছে সাফ করে দিত। আমাদের ছোটবেলায় রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই ভালো ছিল, রাস্তায় জল জমার প্রায় কোনোও ব্যাপারই ছিল না, আর দুই পাশ দিয়ে তিরতির করে বয়ে যেত যে সাময়িক জলধারা, পুতুলের দেশের নদীর মত, সেই জলও থাকত পরিষ্কার, ঝিরঝিরে।সেসব সুখ ক্যাপিটাল সিটিতে নাই, সে হাবে-ভাবে ভেনিসই হোক বা লন্ডন; তাই, মনে করুন বাড়িতে থেকে কাজকর্ম করছি, বাইরে ঝমঝম বৃষ্টি পড়ছে, তখন আমি হেব্বি রোমাণ্টিক হয়ে এক কাপ গরম চা বানিয়ে নিয়ে কিশোরকুমারের গলায় 'রিম ঝিম গিরে সাওন' শুনতেই পারি, মানে শুনেই থাকি; সেটা আলাদা ব্যাপার, আলাদা মেজাজ। কিন্তু, এখানে বলে রাখা দরকার, লতা মঙ্গেশকরের গলায় গাওয়া একই মেজাজের গানের সঙ্গে যে দৃশ্যায়ন হয় 'মঞ্জিল' গল্পে, যেখানে স্যুট পরা তালঢ্যাঙ্গা অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে সিল্ক শাড়ির আঁচল জড়িয়ে ছোটখাটো মৌসুমী মুখার্জি সমুদ্রের ধার ধরে ভিজতে ভিজতে হাঁটছেন , মানে দৌড়াচ্ছেন আর যুগলে গলে গলে পড়ছেন- এহেন রোমান্টিক দৃশ্য একটু দেখার পরেই আমার মনে হয় - আচ্ছা, অমিতাভের পকেটে তো লজিক্যালি একখানা ওয়ালেটে কিছু টাকা থাকা উচিত, হাতে একটা ঘড়ি, সিগারেটের প্যাকেট ইত্যাদি...সেসব যে ভিজে গেল ! কী চাপ...এত ভেজার কী আছে ?নোটগুলো এর পরে শুকাবে কি? বাড়িই বা ফিরবে কীভাবে? বাসের কন্ডাক্টর যদি মেজাজ দেখিয়ে বলে- ভেজা নোট নেব নি ? বলাই বাহুল্য, আমি ওই গান দৃশ্যের মৌসুমীর মত কিংবা মেগাসিরিয়ালের নায়িকাদের মত নই, যে হাতে মোবাইল এবং/অথবা টাকার ব্যাগ ছাড়াই "আমাকে অমুকটা করতেই হবে/ জানতেই হবে/ পারতেই হবে..." ইত্যাদি বলে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায় হাঁটতে শুরু করব। বর্ষাকালে বেরোতে হলে ছাতা নিতে হয়, সেই ছাতা ভিজে গেলে তাকে আলাদা রাখার জন্য প্লাস্টিকের প্যাকেট নিতে হয়, খুঁজে খুঁজে পুরনো, ধুরকুষ্টি জামাকাপড় বের করে পড়তে হয়, বাড়ি ফিরে এসেই কাদার ছিটে তোলার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়... মোদ্দা কথা, বর্ষায় কাজে বেরোতে হলে আমার বেজায় মন মেজাজ খারাপ হয়ে থাকে। কোথায় কখন আটকে যাই...

তেমনি গেছিলাম আটকে, এই মাত্র দিন দুই আগে, ভরদুপুরে। কাজ ছিল দক্ষিণ কলকাতার গোলপার্ক অঞ্চলে। যখন বাড়ি থেকে বেরোলাম, তখন আকাশ দিব্যি পরিষ্কার ছিল, মানে বৃষ্টি হওয়ার মত মেঘ জমেনি। কিন্তু আধা পথ আসতে আসতেই এমন ধুন্ধুমার বৃষ্টি শুরু হল কী বলব। অটোতে বসে পঁচাত্তর ভাগ ভিজে যখন গন্তব্যের পাড়ার মোড়ে নামলাম, দেখি ভাগ্য বিরূপ, চোখের সামনে লাইভ 'সহজপাঠ' -"আমাদের ছোট নদী চলে আঁকে বাঁকে...ইত্যাদি"! সেই মোড় থেকে আমার গন্তব্য হেঁটে তিন-চার মিনিট, কিন্তু যাওয়ার উপায় নাই। রাস্তার মাঝখানে সজোরে জোয়ার ভাঁটা খেলছে। একমুখী রাস্তায় একের পর এক গাড়ি এসেই চলেছে, এবং তাদের চাকার ঘূর্ণনে ফোয়ারার মত জল উঠছে দুইদিকে। তার ওপরে বৃষ্টিও থামছে না। নেহাত একখানা ছাতা সম্বল ছিল, তাই ফুটপাথের ওপর দাঁড়িয়ে রইলাম পাক্কা পঁয়তাল্লিশ মিনিট। যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, তার উল্টোদিকের রাস্তায় গোটা পাঁচেক বাড়ি পরেই আমার গন্তব্য। অথচ যাওয়ার উপায় নাই। এখন আপনি বলতেই পারেন, এ আর কী এমন ব্যাপার, আমাকে তো রোজই যেতে হয় কত দুর্গম গিরি কান্তার মরু পেরিয়ে ! ঠিক, একেবারে ঠিক। মুশকিল হল, আমার রোজ যাওয়ার অভ্যেসটা চলে গেছে। আর সত্যি কথা বলতে, পায়ে খুব ব্যথা ছিল, মাথায় মাইগ্রেন ছিল, আমার কাজ করার বদলে ঘুমাতে ইচ্ছা করছিল, বৃষ্টি পড়া সত্বেও ঠাণ্ডা হওয়ার বদলে আমি ঘেমে জবজবে হয়ে ছিলাম, এহেন পরিস্থিতিতে প্রায় হাঁটু অবধি জল, ছাতা, ব্যাগ, ঢেউ, ফোয়ারা, বৃষ্টি ইত্যাদি এত কিছু এক সাথে হ্যান্ডল করে পেরিয়ে তারপরে এসি অফিস ঘরে ঢোকা পোষাচ্ছিল না - মাল্টিটাস্কিং-এর ও তো একটা লিমিট আছে নাকি ? - তাই দাঁড়িয়ে রইলাম।

তা দাঁড়িয়ে ভালোই হল - বেশ খানিকটা জীবন দর্শন হল। ভালো বাংলায় যাকে বলে ' এক্সপেরিয়েন্সিং স্লাইস অফ লাইফ'। উপরওয়ালা সর্বদাই দরাজ দিল্‌- বললেন, যা ওজন বানিয়েছিস, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পায়ে ব্যথা তো আরোও বাড়বে, অন্তত যাতে আমাকে বেজায় গালাগাল না দিস, তাই তোকে কিছু ফুড ফর থট দিই ! তো সেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই দেখলাম- উল্টোদিকের ফুটপাথের ওপর একগাদা ইয়া বড় বড় কালো কালো ইঁদুর - নালীতে হুড়হুড় করে জল ঢুকছে, তাই আশ্রয়ের খোঁজে তারা ওপরে উঠে এসেছে ।এমনি দিনে অমন ইঁদুর দেখলে আমি তাদের পেছনে স্নাইপারও লেলিয়ে দিতে পারি, কিন্তু সেদিন একটু কষ্টই হয়েছিল। জল জীবন বটে, তবে জল মরণ ও নিয়ে আসে বৈকি। একটু পরেই ওইদিকেই পথের ধারে বসানো সরকারী সবুজ রঙের প্লাস্টিকের অস্থায়ী ভ্যাট তলায় জল জমতে থাকার ফলে দুলতে শুরু করল, তারপরে ধীরে ধীরে হেলতে হেলতে পুরোই উল্টে গেল। এরকমটা যে হতে পারে, 'পুরশ্রী বিবর্ধন'-এর পিতাশ্রী-মাতাশ্রী-মামাশ্রীরা ভেবেছিলেন কিনা কে জানে ! সেই ভ্যাটের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে রাস্তায় ভাসতে থাকল কালো -সাদা প্লাস্টিকের পুঁটুলি, পুজোর ফুল, আধখাওয়া ফল, চিপ্সের এবং দুধের প্যাকেট, এবং অন্যান্য আবর্জনা। সারা পাড়ার যত ময়লা ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে ভেসে ওদিক থেকে এদিকেও এসে গেল। বুঝলাম, যতই ব্র্যান্ডেড জামাকাপড় গায়ে দিক, শহরটা আদতে খুব কিছু বদলায়নি।

কিন্তু বৃষ্টি পড়ছে বলে তো আর কাজকর্ম থেমে নেই। সামনে দিয়েই হেঁটে চলেছেন কত মানুষ। স্কুল ফিরতি ভিজে ঝুব্বুস দুয়েকটি নীল-সাদা জামা পরা ছাত্রছাত্রী, সঙ্গে তাদের বাড়ির লোক কিংবা তত্বাবধানের থাকা মানুষেরা।একটি ফিকে বাসন্তী রঙা ছাতার ভরসায় একজোড়া নব্যপ্রেমিক-প্রেমিকা, আপাদমস্তক ভিজেও হঠাৎ বৃষ্টির আগমনে বেজায় উচ্ছ্বসিত হয়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে অকারণে হাসতে হাসতে পেরিয়ে গেল - মুম্বই কি মেরিন ড্রাইভ নহী তো কেয়া, সময় ভালো থাকলে কলকাতার কালো জল জমা রাস্তাতেও মন 'সুলগ সুলগ' হয়ে যায়। ওদিকে উল্টোদিকের ফুটপাথের বাঁকে একজন মানুষ দেখি একটা মোটা লাঠি নিয়ে রাস্তার কোণায় মাঝে মাঝেই খোঁচা দিচ্ছেন, দেখে মনে হচ্ছে ঘুমন্ত জলনিকাশী ব্যবস্থাকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। ওদিক দিয়েই হেঁটে যেতে যেতে কয়েকজন পথচারী লক্ষ্য করলেন যে সেই ইঁদুরগুলো- ওই যাদের কথা আগে বললাম, - তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি উল্টোদকের বাড়ির কোলাপসিবল গেটের পেছনে একধাপ সিঁড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এই সমস্ত কিছুর মধ্যে, আমার থেকে কুড়ি পা বাঁদিকে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষটি বেজায় বিনয়ে অবনত হয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন- দক্ষিণাপণ এখান থেকে কত দূর...তিনি পথ ভুলে এদিকে চলে এসেছেন...। আমি আদর্শ কলকাতাবাসীর মত তাঁকে দিকনির্দেশ দিতে দিতেই যখন শুনলাম, "আপনি কিছু মনে করবেন না জিজ্ঞাসা করলাম বলে," তখন বুঝলাম, দরকার ছিল না। উনি আসলে কিঞ্চিৎ টাইমপাস করতে চাইছিলেন, গুগল ম্যাপ চান নি। কিন্তু অ্যাপটা সঠিক বাছতে পারেন নি, এই আর কী।

ইতিমধ্যে সামনে দিয়ে মোটামুটি দশ মিনিটের ব্যবধানে চারখানা ই-ওয়ান চলে গেল, একেবারে ফাঁকা ফাঁকা, কিন্তু তাদেরকে বললেও তো তারা উল্টো দিকে রাস্তায় ঢুকবে না, অগত্যা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা এবং ই-ওয়ানের অসাধারণ সার্ভিস সম্পর্কে পুলকিত হওয়া ছাড়া বিশেষ কিছু করার ছিল না। বৃষ্টি একটু ধরে আসার পরে আমি নদী পেরোনোর চেষ্টা করেছিলাম একবার, এক -পা এক- পা করে, আমার এহেন প্রচেষ্টা দেখে ডান দিক থেকে আসা ট্যাক্সিচালক নিজেই গতি ধীর করে দিলেন, তাঁর পেছনে আরো তিন চারটে গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল, কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম আমি অবিকল জুটোপিয়ায়র স্লথেদের মত নড়াচড়া করছি। তাই ইশারায় সেই চালক কে এগোতে বলে, নিজে পিছিয়ে এলাম ।

অনেক পরে, অবশেষে আমি সেই ছোট নদী পেরোতে সক্ষম হয়েছিলাম। এক বিশালবপু, মানে আমিও তাঁর কাছে শিশু - বয়স্ক ভদ্রলোক দেখলাম দিব্য নদী পেরোনোর তোড়জোড় করছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, "আপনি কি ওদিকে যাবেন?" উত্তর হ্যাঁ শুনে বললাম,"আমি আপনার পাশে পাশে হাঁটব, একলা পেরোতে সাহস হচ্ছে না।" তাঁর সহাস্য অনুমোদনের ভরসায় ওপাশে গিয়ে ফুটপাথে উঠতে সাহায্য চাইলাম সেই মানুষটির কাছে - যিনি লাঠি দিয়ে রাস্তা খোঁচাচ্ছিলেন। জিজ্ঞেস করলাম , "আপনি কি নালীটার মুখ খোলার চেষ্টা করছিলেন? কর্পোরেশনের ডিউটি?" তিনি মলিন হেসে , ফুটপাথের ধার ঘেঁষে থাকা প্লাস্টিক জড়ানো কিছু দেখিয়ে বললেন " দোকানে জিনিষ আছে, জল উঠে এলে সব নষ্ট হয়ে যাবে, তাই যতটা পারি সরাচ্ছি" , তারপরে একটু থেমে "...আলুর বস্তা আছে।"

বাকিটা পথ সহজেই চলে গেলাম- পাড়ার ভেতর জল জমেনি। কাজকর্ম সেরে অনেক পরে যখন বাড়ি ফিরলাম, তখন রাস্তার সব জল নেমে গেছে। ছোট নদী ভ্যানিশ। ইঁদুরগুলো কোথায় গেছিল কে জানে?মাটির নিচে নিজেদের ভাঙ্গা সুড়ঙ্গ বাড়িতেই নিশ্চয়। সে খালি সবুজ অস্থায়ী ভ্যাট নিজের জায়গা থেকে অনেকটা এগিয়ে এসে পড়ে আছে। সেই আলুর দোকানিকেও দেখতে পেলাম না। ব্যস্ত মোড়টাকে দেখে বোঝার উপায় নেই, মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে এখানে জীবন কীভাবে হঠাৎ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। কয়েক ঘন্টা আগে, সেই ধারাবর্ষণের মধ্যে দাঁড়িয়ে, উলটো ফুটপাথের ইঁদুরগুলোকে দেখতে দেখতে আমার একবারের জন্যেও মনে হয়নি "...ওপাড়েতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস", বরং সেই বিপর্যস্ত অবস্থায় আমি অনুধাবন করতে পেরেছিলাম, আসলে ওই ইঁদুরগুলো আর আমার মধ্যে খুব একটা ফারাক নেই। যেকোনোও মূহুর্তের বিপর্যয়েও আমিও ঠিক ওইরকম অসহায় ভাবে খোলা আকাশের নিচে এসে দাঁড়াতে পারি।

ভাবছিলাম, কলকাতা শহরে এরকম পাড়া আরোও অনেক আছে ... আমি নিজেই কত এমন পাড়াকে চিনি, আধাঘন্টা বৃষ্টি হলেই যা বেহাল হয়ে যায়। এই শহরের নিত্যনতুন চাকচিক্য বৃদ্ধি পায়, কিন্তু আসল সমস্যাটা দূর হয় না, সেটা হয়ত বেশ অনেকটাই ভৌগলিক কারণে, মানে কড়াইকে তো আর হঠাৎ করে দোসা তাওয়া বানিয়ে দেওয়া যাবে না; আর বেশ খানিকটা অবশ্যই বিবিধ স্তরের উদাসীনতায়।

উদাসীনতার কথায় মনে হল - এত বৃষ্টিতে ভিজলাম, ভেজা কাপড়ে, জলের নিচে দাঁড়িয়ে রইলাম, তারপরেও এসিতে বসে কাজ করলাম - এর পরে তো আমার সর্দি- কাশি-হ্যাঁচ্চো হওয়া অবধারিত ছিল। কিন্তু না, হয়নি। হয়না। কারণ একটাই - জীবনে ৩৬৫ দিন, আবহাওয়া নির্বিশেষে ব্লেজার পরিহিত শারুক্ষানের অভাব। তবে কিনা কলকাতার এই ভরা গরমে কেউ ব্লেজার পরে ঘুরলে আমি তার পাশে এমনিতেও হাঁটব না, তাই ব্লেজার খুলবে কিনা সেটাও জানা প্রায় অসম্ভব। তবুও,তবুও ছটাকখানেক বৃষ্টিভেজার পরে হ্যাঁচ্চো করলেই শিভ্যালরির চূড়ান্ত নিদর্শন দেখিয়ে নিজের গায়ের ভিজে ব্লেজার খুলে আমাকে যদি কেউ পরিয়েই না দিল, তাইলে হ্যাঁচ্চো এসে লাভ কী?


ফেসবুকে প্রকাশিতঃ https://www.facebook.com/mahasweta.ray/posts/10156783472917494