Nor'wester
- Category: Haiku
Blue gives way to gray;
Dark clouds paint the horizon-
Rain drops quench the thirst;
রঙের মনস্তত্ব
- Category: এই সময়, এই জীবন
ইন্দিরাদির লেখাটা পড়ে মনে হল একটু কালার সাইকোলজি, বা রঙের মনস্তত্ব নিয়ে কথা বলা যাক।যাঁরা একটু রঙ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন (অথবা করেন না), ছবি-টবি আঁকেন (অথবা আঁকেন না)- তাঁরা মোটামুটি সবাই জানেন সবুজ রঙ তৈরি হয় দুটো প্রাথমিক রঙ - নীল আর হলুদ মিশিয়ে।যদি নীল আর হলুদ কে আলাদা করে ধরি, তাহলে বলি, নীল হল খোলা আকাশ, দিগন্ত বিস্তৃত সাগরের (আর লেকের) জলরাশির রঙ; নীলের সাথে জড়িয়ে আছে মুক্তচিন্তা, বিশ্বাস এবং প্রাজ্ঞতার আশ্বাস। আর আধুনিক জীবনে, নীল অবশ্যই পেশাদারিত্বের/প্রফেশন্যালিস্ম্ এর রঙ - একটু ভেবে দেখুন দেখি- আমাদের আশেপাশের কতগুলি সফল বহুজাতিক সংস্থার লোগোতে ব্যবহার করা হয়েছে নীল ?আর হলুদ - হাসিখুশি হলুদ হল প্রানোচ্ছলতা, স্ফূর্তি, আনন্দ আর উচ্ছলতার রঙ, আবেগের রঙ । ইয়াহু মেসেঞ্জার বা জি-টক, অথবার কফিহাউসের জাজু ইমোটিকন্স্- সব স্মাইলিরই কিন্তু প্রাথমিক রঙ হলুদ। স্কুল বাসের রঙ হলুদ। বাঁদরলাটির রং-ও ।আবার আরেকদিক থেকে দেখতে গেলে, কালার হুইলে নীল পড়ে শীতল রঙ/ কুল কালার্স্ এর দলে, আর হলুদ পরে উষ্ণ রঙ/ ওয়ার্ম কালার্স এর দলে।পশ্চিম বঙ্গে গত ১৩ই মে যে সবুজের জোয়ার এল (সুনামি বলব না, সুনামি বড় ভয়ানক সব স্মৃতি বহন করে আনে) , সেই জোয়ারের কথা মাথায় রেখেই বলি, এই সবুজে থাক নীল আর হলুদের সঠিক মিশেল - তৈরি হোক এক সজীব সবুজ - যেখানে পেশাদারিত্বের সাথে থাকবে সংবেদনশীলতা, মুক্তচিন্তা এসে মিশবে আবেগের সাথে, প্রাজ্ঞতার সাথে মিশে যাবে প্রানোচ্ছলতা। এ সবুজ হোক নাতিশীতোষ্ণ - চোখজোড়ানো, মন ভরানো। সবুজ যে প্রকৃতির রঙ, সজীবতার রঙ, আশার রঙ।[তা বলে লাল কি খারাপ রঙ? আমরা তো জানি লাল হল ভালবাসার রঙং। প্যাশনের রঙ। কৃষ্ণচূড়ারও রঙ। কি করে যে বদলে হয়ে গেছিল শুধুমাত্র রক্তের, লালফিতের আর সাদা অ্যাম্বাসেডরের মাথায় বাতির রঙ - কে জানে! ][ ইন্দিরাদির পোস্টে কমেন্ট রূপে প্রকাশিত কফিহাউসেরআড্ডার এই পাতায়]
রবি ঠাকুরের জন্য কবিতা
- Category: ছড়া-কবিতা
"আমাদের ছোট নদী চলে আঁকে বাঁকে..."
ছোট্ট বেলার ছবি মন আজও ঠিক আঁকে;
"আমি যদি চাঁপার বনে চাঁপা হয়ে ফুটি..."
তবে বুঝি মন সত্যি সত্যি আজকে নেবে ছুটি;
"মাগো আমায় ছুটি দিতে বল..."
মন , দুজনাতে মিলে আজ পথ হাঁটি চল;
মেমরিজ ইন মার্চ - বাসন্তী স্মৃতিগুলি
- Category: সিনেমা দেখার পরে
ঘোর বসন্তে হটাত করে বিদায় নিল এক যৌবনের দূত। সার্থক, সফল, উজ্জ্বল কপিরাইটার সিদ্ধার্থ। পেছনে ফেলে রেখে গেল অজস্র স্মৃতি। যে স্মৃতি অনবরত নাড়া দিয়ে চলেছে তিনটি মানুষকে। আরতি, সাহানা আর অর্নব। সম্পর্কের ত্রিমাত্রিক বহুভূজে, তিনটি বিন্দুতে দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি মানুষ। সিদ্ধার্থের সাথে তাদের তিনজনের তিনরকমের সম্পর্ক।ব্যবহার করা বেডশীট, অ্যাকুয়ারিয়ামের রঙিন মাছ, ফ্রিজে পড়ে থাকা শেষ ডিম, অফিসের সফ্টবোর্ডে আটকানো ছবি, মোবাইলে মকশো করা চিঠি, ফেসবুকের মেসেজ, আর আরো অনেক টুকরো টুকরো স্মৃতির হাত ধরেই তারা চেনেন একে অপরকে, আর হয়ত আরেকবার নতুন করে চেনে্ন সিদ্ধার্থকে।সঞ্জয় নাগ নির্দেশিত ‘মেমরিজ ইন মার্চ’ এ মূল চরিত্রগুলিতে অভিনয় করেছেন দীপ্তি নাভাল, ঋতুপর্ন ঘোষ, রাইমা সেন। অনেকদিন পরে দীপ্তি নাভালকে পর্দায় দেখে খুব ভাল লাগল।
ঘুমপাড়ানী ছড়া
- Category: ছড়া-কবিতা
আয় ঘুম যায় ঘুম বালিগন্জো দিয়ে
বাঁড়ুজ্জেদের ছুটকু ঘুমায় কোলবালিশ নিয়ে
ছুটকুরানী ঘুমের মধ্যে এপাশ ওপাশ করে
ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি বেকায়দায় পড়ে
তারা টুপটুপ, আধো জোছনা, পাড়া হোক নিঃঝুম
ছুটকুরানীর দুচোখ জুড়ে নেমে আসুক ঘুম।
নববর্ষ ১৪১৮
- Category: অনুধ্যান
'আমাকে আমার মত থাকতে দাও...' - হ্যাঁ, এই কথাটা বেশ গম্ভীর গম্ভীর গলায় বলতেই পারে নতুন বঙ্গাব্দ - নেই নেই করে বাংলা চতুর্দশ শতক এইবার আঠেরোয় পা দিয়েই ফেলল যে ! আর কে না জানে, আঠেরো বছর বয়স মানেই বড় হয়ে যাওয়া, কাগজে কলমে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাওয়া, হয়ত বা অনেক কিছু করার ছাড়পত্রও পাওয়া !আঠেরো বছর আগে যখন বঙ্গাব্দ ১৪০০য় পা দিল, মনে আছে তখন নানান উতসব উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে তাকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। হিসেব করে দেখতে গেলে, সেই আঠেরো বছর আগে আমি নিজেও আঠেরোর আশেপাশেই ছিলাম। মানসিক ভাবে কতটা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছিলাম তা আজ আর সত্যিই মনে নেই, কিন্তু কাগজে কলমে "বড়" হয়ে কোন একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথম বার ভোট দিয়ে এসে , বাঁ হাতের মধ্যমায় বেগুনী রঙের দাগটাকে দেখে দেখে বেশ কয়েকদিন যে খুব উত্তেজিত বোধ করেছিলাম তা বলতে পারি।
My first haiku
- Category: Haiku
"Don't miss me", said he
Sweet the cuckoo of spring sings -
Of feelings unknown.
কলকাতায় বসন্ত
- Category: ছড়া-কবিতা
গড়িয়াহাটার মোড়ে,
মহানাগরিক ভীড়ে,
একটা পলাশ গাছ,
হটাত ফাগুন ভোরে
গড়িয়াহাটার মোড়ে,
মহানাগরিক ভীড়ে,
একটা পলাশ গাছ,
হটাত ফাগুন ভোরে,
ধূসর নীল আকাশ
(আর )মৃদু দখিনা বাতাস
পটভূমিতে রেখে, আঁকে
লাল-কমলা আভাস।
বাসে বা ফুটপাথে
ব্যস্ত চলার পথে,
বসন্তরাজ সহযাত্রী
নতুন পাতার রথে।
সাত রঙা বেলোয়াড়ি
ফাগুন-ফেব্রুয়ারি,
ইচ্ছেমতন সাজিয়ে তোলে
ধূলি ধূসর নগরী।
বিজয়ার চিঠি
- Category: এই সময়, এই জীবন
এই শরতে আমার জীবনে এল এক বড় পরিবর্তন। আমি ছোট্টবেলা থেকে যে প্রান্তিক শিল্পনগরীতে বড় হয়েছি, খেলে বেড়িয়েছি, স্কুলে গেছি, সেই রূপনারায়ণপুর ছেড়ে আমার বাবা মা পুরোপুরিভাবে চলে এলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কোদালিয়ায়, একটি নবগঠিত আবাসন প্রকল্পে। খোলা বাগান, রোদেভরা উঠোন, দখিন খোলা চাঁদ-সূ্য্যি ঢালা বারান্দার জায়গা নিল দুই কামরার ছোট্ট ফ্ল্যাট। এই সিদ্ধান্ত না নিয়েও উপায় ছিল না। কলকাতা থেকে যাতায়াতে প্রায় সাত-আট ঘন্টা সময় লেগে যায়। আমি বা আমার ভাই কাজকর্মের চাপে বছরে বার দুয়েকের বেশি যেতে পারতাম না। যে কোন কারণবশতঃই হোক, ওদিকে চিকিতসা ব্যবস্থাও খুব একটা সুবিধাজনক হয়ে ওঠেনি। আমার বাবা মাও চাইছিলেন আমাদের কাছকাছি থাকতে। তাই সব মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পাট গুটিয়ে চলে আসা হল।
দুর্গার পুজো
- Category: এই সময়, এই জীবন
আমার এবারের পুজো খূব ব্যস্ততায় কাটছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও পুজোয় নতুন পোস্ট দিতে পারছি না। মনের মধ্যে নানা কথা ঘুরছে ফিরছে, কিন্তু লেখার সময় নেই। কেন নেই, সেটা বলার জন্যও সময় চাই।
হাজার ব্যস্ততার ফাঁকেও আজ ষষ্ঠীর সন্ধ্যাবেলা কিছু পড়শির সাথে বেরিয়েছিলাম পাড়ার কাছাকাছি ঠাকুর, বা বলা ভাল, মন্ডপ দেখতে। বিশাল বিশাল মূর্তি, প্রচুর আলো, অসাধারণ পরিশ্রমে সৃষ্ট শিল্পকলায় সাজানো মন্ডপ…চোখ জোড়ানো, মন ভোলানো। পাঁচটাকা দিয়ে প্লাস্টিকের বাঁশি কিনে ফেললাম – ফুঁ দিলেই সামনে লাগানো গোটানো অংশ হাওয়া পেয়ে লাফিয়ে উঠছে…সঙ্গী ছোটদের সাথে পাল্লা দিয়ে বাশিঁ বাজালাম, আইসক্রিম খেলাম, ঘটি-গরম খেলাম, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখলাম…
এত আলো, এত আনন্দের মধ্যে হঠাত চোখে পড়েছিল রাস্তার ধারে শ্রান্ত, ক্লান্ত, দীন এক শরীর …হুল্লোড় – রোশনাই এর তোয়াক্কা না করে ঘুমিয়ে আছে…অথবা সে হয়ত অসুস্থ এবং অভুক্ত…
গত মাস দুই তিনেক যাবত খবরের কাগজে এবং টিভি চ্যানেলে অনেক ছবি দেখেছি – খরার ছবি, বন্যার ছবি, ধ্বংসের ছবি, দুর্ঘটনার ছবি, যুদ্ধের ছবি – সেইরকমই এক ছবি এঁকে ফেলেছিলাম কোন এক মূহুর্তে। অনেক দুর্গার পুজো হয়ত এইরকমই হয়।
বাড়ী ঢোকার আগে প্লাস্টিকের লাল রঙের বাশিঁটা দিয়ে দিলাম আমার আবাসনের পুজোয় যিনি ঢাক বাজাতে এসেছেন, তাঁর ছোট্ট ছেলেকে। ওর নাম অবশ্য জানিনা – হতে পারে গনেশ , বা কার্তিক…
দুর্গার পুজো
- Category: অনুধ্যান
আমার এবারের পুজো খূব ব্যস্ততায় কাটছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও পুজোয় নতুন পোস্ট দিতে পারছি না। মনের মধ্যে নানা কথা ঘুরছে ফিরছে, কিন্তু লেখার সময় নেই। কেন নেই, সেটা বলার জন্যও সময় চাই।
হাজার ব্যস্ততার ফাঁকেও আজ ষষ্ঠীর সন্ধ্যাবেলা কিছু পড়শির সাথে বেরিয়েছিলাম পাড়ার কাছাকাছি ঠাকুর, বা বলা ভাল, মন্ডপ দেখতে। বিশাল বিশাল মূর্তি, প্রচুর আলো, অসাধারণ পরিশ্রমে সৃষ্ট শিল্পকলায় সাজানো মন্ডপ…চোখ জোড়ানো, মন ভোলানো। পাঁচটাকা দিয়ে প্লাস্টিকের বাঁশি কিনে ফেললাম – ফুঁ দিলেই সামনে লাগানো গোটানো অংশ হাওয়া পেয়ে লাফিয়ে উঠছে…সঙ্গী ছোটদের সাথে পাল্লা দিয়ে বাশিঁ বাজালাম, আইসক্রিম খেলাম, ঘটি-গরম খেলাম, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখলাম…
এত আলো, এত আনন্দের মধ্যে হঠাত চোখে পড়েছিল রাস্তার ধারে শ্রান্ত, ক্লান্ত, দীন এক শরীর …হুল্লোড় – রোশনাই এর তোয়াক্কা না করে ঘুমিয়ে আছে…অথবা সে হয়ত অসুস্থ এবং অভুক্ত…
গত মাস দুই তিনেক যাবত খবরের কাগজে এবং টিভি চ্যানেলে অনেক ছবি দেখেছি – খরার ছবি, বন্যার ছবি, ধ্বংসের ছবি, দুর্ঘটনার ছবি, যুদ্ধের ছবি – সেইরকমই এক ছবি এঁকে ফেলেছিলাম কোন এক মূহুর্তে। অনেক দুর্গার পুজো হয়ত এইরকমই হয়।
বাড়ী ঢোকার আগে প্লাস্টিকের লাল রঙের বাশিঁটা দিয়ে দিলাম আমার আবাসনের পুজোয় যিনি ঢাক বাজাতে এসেছেন, তাঁর ছোট্ট ছেলেকে। ওর নাম অবশ্য জানিনা – হতে পারে গনেশ , বা কার্তিক…
নিয়ম-কানুন
- Category: ছড়া-কবিতা
ত্রিকোণ পার্কের ধারটি ঘেঁসে
আষাঢ় কিংবা শ্রাবণ মাসে
বোকা গাছটা ফোটায় নিয়ম মাফিক কদমফুল,
আঁধার সাঁঝে পুলিশ গাড়ি
ঝিলের ধারে রুলের বাড়ি
প্রশাসনিক সংজ্ঞা লেখে - প্রেমে পড়া ভুল !
মেয়েটা কাল যাবে শ্বশুরবাড়ি
- Category: ছড়া-কবিতা
লাল খোপ খোপ নতুন গামছা
লাল পাড় কোরা শাড়ি
মেয়েটা কাল যাবে শ্বশুরবাড়ি
হলুদ কুটবে সাতটি এয়ো
সাতটি পান-সুপারি
মেয়েটা কাল যাবে শ্বশুরবাড়ি
সরস্বতীর অ্যালবাম
- Category: বাসী খিচুড়ি
ছবি ১
ছোট্ট মেয়ে। বয়স পাঁচ বা ছয়। ঝকঝকে সকাল। একটা পুরোনো বাড়ির পাশের ইঁট বাঁধানো গলি। এককোনায় একটা লাল জনতা স্টোভের ওপর বসানো কালো হাঁড়ি। টগবগ করে জল ফুটছে। সামনে বসে দুই পিসি। ফুটন্ত জলের মধ্যে নেচে বেড়াচ্ছে শুকনো শিউলির বোঁটা। আর পাক খাচ্ছে একফালি লম্বাটে কাপড়ের টুকরো। মেয়েটা লাফাতে লাফাতে কাছে এলেই পিসিরা বলছে দূরে যাও, দূরে যাও… একটু পরে একটা লাঠির ডগায় জড়িয়ে বেড়িয়ে এল ফ্যাকাশে হলদেটে-কমলাটে রঙা সেই কাপড়ের ফালি। শিউলির বোঁটায় রাঙানো পুতুলের শাড়ি।
ছবি ২
সন্ধ্যাবেলা। দুই ভাই বোনের খুব ব্যস্ততা। কাল সরস্বতী পুজো। মায়ের আলপনা আঁকা হয়ে গেছে। বাবা বাজার থেকে নিয়ে এসেছেন মাটির দোয়াত, খাগের কলম। তবে মূর্তি নেই। মা বলেছেন ঠাকুরঘরের পটকেই পুজো করা হবে। একটু মন খারাপ…সবার বাড়ি মূর্তি আসে…কিন্তু কি আর করা…বাবা, মা দুজনেরই যে স্কুলের দায়িত্ব, তাই বাড়ির পুজো তাড়াতাড়ি শেষ করে স্কুলে যেতে হবে… আজ রাতে ঠাকুরের পায়ের কাছে সব বই রাখতে হবে যে…বিষয় মিলিয়ে সব বিষয়ের বই সাজায় দুইজনে। কোন বই ভুললেই মুশকিল! মা সরস্বতী আর সেই বিষয়ে কোন সাহায্য করবেন না !! বাবারে, এই ভুল করা যায় কখনো…বাবা যতই বলুন না কেন যে সব বই দেওয়ার দরকার নেই, সে কথা শুনছে কে?
ছবি ৩
সকাল থেকে খুব মন খারাপ। এতদিনের কুল না খেয়ে থাকা কোন কাজে লাগলো না আর। ঘুম থেকে উঠে, অঞ্জলি দেওয়া হয়নি, প্রসাদ খাওয়া হয়নি, মা সরস্বতীর কাছে ভালো করে প্রার্থনা করা হয়নি, আর চোখ কিনা সোজজা চলে গেল গতকালের খবরের কাগজের ওপর আর সে যে পড়ে ফেলেছে বড় বড় অক্ষরে লেখা প্রথম লাইন! এইবার কি হবে! কে না জানে যে সরস্বতী পুজোর দিন মোটেও পড়শোনা করতে নেই, অক্ষরের দিকে তাকাতেই নেই…কি যে হবে…মা সরস্বতী নির্ঘাত রেগে গেলেন একটু…
ছবি ৪
গোলাপি আর সাদা সালোয়ার কামিজ পরা বছর তেরোর মেয়েদুটি হাঁটছে বাস রাস্তার দিকে। স্কুলে যাচ্ছে স্কুলের পুজো দেখতে। আজ স্কুল বাস নেই। তাতে কি? আজকেই তো বড় হওয়ার দিন। ক্লাস সেভেন। এই প্রথম একলা একলা পাবলিক বাসে চেপে সরস্বতী পুজোর দিন স্কুলে যেতে দিতে রাজি হয়েছেন বাবা-মারা। তবে শাড়ি পড়ে বাসে উঠতে গিয়ে হোঁচট খেলে বা পড়ে গেলে কি হবে? তাই শাড়ির বদলে সালোয়ার কামিজ ই সই। স্কুলের গেটের সামনে এসে হাঁ ! সামনে কাতার দিয়ে সাইকেল, স্কুটার, মোটরসাইকেল আর অগুন্তি নানাবয়সী ছেলে !! নিজেদের স্কুলে নিজেরাই ঢোকা দায়। কোনমতে ঢুকে ঠাকুর দেখে, প্রসাদের প্যাকেট যোগাড় করে, ভীড়ে থতমত দুজনে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেখতে পাচ্ছে এদিক-ওদিক, প্রচুর সাজগোজ করা মেয়েরাও আছে, কিন্তু মেয়েদের স্কুলে একতলা, দোতলা, এমনকি ছাতেও- এত এত ছেলে? তাদের জামার কাট, চুলের ছাঁট, কপালের ওপরে তোলা সানগ্লাস- সবই তো খুব চেনা, কিন্তু চোখের দৃষ্টি, শরীরের ভঙ্গী-মাঝে মাঝে এত অচেনা লাগে কেন? অচেনা অনুভূতির হটাত ধাক্কায় কিছু ভয়, কিছু উত্তেজনা, কিছু গা শিরশির নিয়ে স্কুল থেকে বেরিয়ে আসে দুজনে। বড় হওয়ার রোমাঞ্চ যে বড় গোলমেলে…
ছবি ৫
ছেলেটা গেছে তার বন্ধুদের সাথে চাঁদা তুলতে সরস্বতী পুজো করবে বলে। সব ছেলেরা করে, তারাই বা বাদ কেন? তবে সঙ্গি-সাথী মোটে তিন-চারজন। তাতে কি? পাশের বাড়ি গিয়ে দরজায় ঠকঠক। জেঠু দরজা খুলে বললেন
-কি চাই?
-আমরা সরস্বতী পুজো করবো, চাঁদা চাই।
-কত চাঁদা?
-তোমার যা ইচ্ছা দাও।
চাঁদা আদায়কারি ছেলেটার এহেন দাবী শুনে হেসে উঠলেন জেঠু। বললেন -এভাবে চাইলে তো কম দেওয়া যাবে না। আচ্ছা যা দশ টাকা দিলাম।
সেই একবারই ছেলেটা পুজো নিয়ে উতসাহ দেখিয়েছিল। সেই দশটাকাটা ছিল সেবারের সব থেক বেশি চাঁদা।
ছবি ৬
বাবার খুব ফুল গাছের শখ। শীতে তাই বাগান ভরা বাসন্তী-কমলা গাঁদা, লাল-মেরুন- গোলাপি ডালিয়া, হলুদ, সাদা চন্দ্রমল্লিকা। আগুন রঙা বৈজয়ন্ত। ডালিয়া আর চন্দ্রমল্লিকারা টবে, কিন্তু গাঁদারা সবাই বাড়ি ঢোকার পথের পাশে কেয়ারি করা। তাই টবেরা সরস্বতী পুজোর আগের দিন বিকেলে ঢুকে গেল ঘেরা বারান্দার ভেতর। আর পরদিন সকালবেলা যা ভাবা গেছিল, তাই হল। হলুদ কমলায় সেজে থাকা উজ্জ্বল বাগানটা এক রাতের মধ্যে হয়ে পড়েছে রংহীন, জৌলুশহীন। ভোর রাতে দুষ্টু ছেলের দল সমস্ত ফুল তুলে নিয়ে গেছে যে!
ছবি ৭
মেয়েটা ক্লাস ইলেভেন। শাড়ী-টাড়ী পড়ে অন-নে-এ-ক বড়। স্কুল এর পুজোর সেক্রেটারি। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে নিঃশ্বাস ফেলার যোগাড় নেই।বন্ধুদের উতসাহে এবং তার উদ্যোগে নিয়মের মাঝে একটু বদলের হাওয়া …এইবার প্রথম স্কুলের বিশাল হলের মেঝে জুড়ে সাবেকি সাদা আলপনার বদলে রঙিন বালির আলপনা। স্কুলের উঁচু ক্লাসের মেয়েরা তাই অফ পিরিয়ডে বসে বালি চালছে, তাতে আবির মেশাচ্ছে, আলাদা আলাদা রঙের বালি তৈরি হচ্ছে, আর ধীরে ধীরে স্কুলের হলের মাঝখানে ফুটে উঠছে রঙিন কার্পেটের মত বালির আলপনা। চারপাশে হাঁ মুখ নিচের ক্লাসের মেয়েদের ভীড়। বড় দিদিদের হাতের কাজ দেখছে অবাক চোখে। …পুজোর দিন বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন স্বয়ং বড়দিদিমণি !…সকলের প্রশংসা শুনে বাইরে এসে বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে খুশির আমেজ, সাফল্যের উত্তেজনা…আর রাশি রাশি ছেলেদের ভীড় দেখে সেই নাম-না-জানা-উত্তেজনা?- না…এখন আর সেই ভয়টা নেই, বরং এসেছে একটা দেখেও-দেখছি-না-বুঝেও-বুঝছি-না ভাব… !
ছবি ৮
পুজোর দুইদিন পরে স্কুলে খিচুড়ি খাওয়া। কোমরে আঁচল জড়িয়ে খিচুড়ির বালতি আর বেগুনির ঝুড়ি নিয়ে সার দিয়ে বসা মেয়েদের মাঝখান দিয়ে এপাশ থেকে ওপাশ যাচ্ছে কিছু মেয়ে। ভারি বালতি হলে সাহায্য করছেন মাস্টারমশাইরা। এ কদিন সবাই যেন সবার বন্ধু। স্যার বা দিদিমণিদের একয়দিন একটু কম ভয় পেলেও চলে।
ছবি ৯
উত্তর কলকাতার মেয়েদের কলেজ হোস্টেল। সকালে পুজো, দুপুরে খিচুড়ি, সন্ধ্যেবেলা অতিথি আপ্যায়ন (আশেপাশের ছেলেদের হোস্টেল থেকে ছেলেরা ) এবং অন্যান্য হোস্টেল পরিদর্শন (বিশেষ করে আশেপাশের ছেলেদের হোস্টেল গুলি )। এই একটা দিনই তো সব কিছুর ছাড়…কিছু চোখে চোখে কথা, কিছু ভদ্র আলাপচারিতা, আর অনেক না বলা তথা, না মেটা কৌতূহল…মেট্রনও প্রায় দেখেও না দেখার ভান করেন। পুজোর পরের দিন ভাসান দিয়ে এসে সারা রাত ধরে তিনরকমের ফিল্ম দেখা- বাংলা, হিন্দি আর ইংলিশ – যাতে কেউই অখুশি না হয়। সরস্বতীর ভাসান দিয়ে এসে সবাই নাকি ভাং খায়, আমরা খাবো না? নিশ্চয় খাবো- একদন সাহসিনীর ঘোষনা। একফোঁটাও খাবোনা, জানায় অন্য দল। প্রায় বন্ধ বাজার থেকে কিনে আনা হয় ভাং, আর গুঁড়ো পাউডার গুলে দুধ বানিয়ে, তাতে ভাং গুলে খাওয়া হয়। যারা খায় আর যারা খায়না- ফলাফল একই !! চল্লিশজন মেয়ের মোকাবিলা করতে পারে কি মোটে দুই-তিন মুঠো ভাং !!
ছবি ১০
পুজোর পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মাটির দোয়াতে খাগের কলম ডুবিয়ে বেলপাতায় তিনবার করে লিখছে দুই ভাই বোন- শ্রী শ্রী সরস্বতৈ নমঃ। তারপর দধিকর্মা -দই-চিঁড়ে-ফল সব দিয়ে মেখে খেতে কি ভালো। মা বলছেন- মা সরস্বতীর পায়ের ফুল সব বইয়ের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখো। আর আজকে সারাদিন খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হয়…
হোস্টেলে খাগের কলম দোয়াত আলাদা করে জোটে না, তাই খাতার পাতাই সই…শেষ দুপুরে সবার সাথে লরিতে উঠে গঙ্গার ঘাটে ভাসান দিতে গিয়ে যখন মূর্তিটা ধীরে ধীরে ডুবে যেতে লাগলো পড়ন্ত সূর্যের আলোয় চিকচিক করতে থাকা জলের তলায়, তখন দুচোখ ভরে শুধু জল…
ফুলঝাড়ু…মাছ…কোয়ালিটি…
- Category: বাসী খিচুড়ি
আমার মফস্বলী ছোটবেলার একটা নিয়মিত অভিজ্ঞতা ছিল ফেরিওয়ালারা। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিয়মিত আসতো, কেউ বা অনিয়মিত। পুরোনো কাপড়ের বদলে স্টিলের বাসন নিয়ে অবাঙ্গালী বাসনওয়ালি, মিশনের ধূপকাঠি নিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া সাইকেল কারখানার সেই ভদ্রলোক যাঁর চশমার কাঁচটা খুব মোটা ছিল, জয়নগরের মোয়া, তিলের খাজা নিয়ে মরসুমি অচেনা মুখ, শীতকালে শালের বিশাল পোঁটলা পিঠে নিয়ে আপেলের মত গালওয়ালা চাপদাড়ি কাশ্মীরী ছেলের দল, সন্ধ্যেবেলা টং টং আওয়াজ করে দক্ষিনী দোসাওয়ালা…এছাড়া ছিল আরো কয়েকজন। তাদের ঠিক ফেরিওয়ালা বলা যাবে কিনা জানিনা, কারন তারা ছিল নিয়মিত যোগানদার, আর আমি তাদেরকে মোটামু্টি ঘরের লোক মনে করতাম। তাদের মধ্যে প্রথম ছিল হাজরাকাকু। হাজরাকাকুর নাম জানতাম না, এখনো জানিনা, বাবারা ওনাকে ‘হাজরা’ বলে ডাকতেন, তাই উনি আমাদের সবার হাজরাকাকু।
অনলাইন গেমস – আমার নতুন ডিজিটাল অভিজ্ঞতা
- Category: এই সময়, এই জীবন
আমি কম্পিউটার ব্যবহার করছি গত এগারো বছর ধরে। এই এগারো বছরের মধ্যে কম্পিউটারের নানারকম সফটওয়্যার আমাকে নানাভাবে আকৃষ্ট করেছে। আমার প্রথম ভালোলাগা ছিল গ্রাফিক সফটওয়্যারগুলি, কারন সেগুলি ব্যবহার করে নানারকম ছবি আঁকা যেত। প্রথম ব্যবহার করতে শিখেছিলাম MS Paint, তারপরে Adobe Photoshop, CorelDraw, Flash, যখন যেটা দরকার পড়েছে, শিখেছি। যখন থেকে ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচিত হলাম, তখন থেকে শুরু হল এক অন্যরকম উতসাহ। নতুন নতুন বিষয় জানা, জানা বিষয়ে অজানা তথ্য আবিষ্কার করার এক নতুন নেশায় মেতে গেলাম। কিন্তু এই ডিজিটাল দুনিয়ায় যে বিষয়টি আমাকে একেবারেই উতসাহিত করেনি, সেট হল কম্পিউটার গেমস। আমার ভাই যখন সেই বিখ্যাত মোটরসাইকেল রেসের খেলা "রোডর্যাশ" খেলত, আমি মাঝে মাঝে পাশে বসে দেখতাম। পুরো ব্যাপারটার মধ্যে আমার যেটুকু উতসাহ ছিল সেটা ছিল ঐ গেমটি তে ব্যবহার করা বিভিন্ন ল্যান্ডস্কেপ গুলি নিয়ে - কোনটা সমুদ্রের ধার দিয়ে, কোনটা বা শহরের মধ্যে দিয়ে, কোনটা বা উঁচু নিচু উপত্যকার মধ্য দিয়ে। ঐ গেমটি দেখার মূল আকর্ষণ ছিল গ্রাফিক্সগুলির মাধ্যমে আমেরিকার বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটু আভাস পাওয়া। কিন্তু এছাড়া আর কোন উতসাহ ছিল না। আমি এমনকি মোবাইল ফোনের গেম গুলিও খেলি না। উইন্ডোস এর সাথে আসা তাস বা অন্যান্য কোন গেমগুলিকে খেলিনি কোনদিন।
অথচ ইদানীং গত দুই-তিন মাস ধরে, আমার যাবতীয় মনোযোগ আকর্ষণ করে নিয়েছে ফেসবুকের বহুল জনপ্রিয় তিনটি গেম - প্রথমে ফার্মভিল [Farmville] , তারপরে ক্যাফে ওয়্ররল্ড [Cafe World], এবং শেষ কিছুদিন যাবত ফিশভিল [Fishville]। ফার্মভিলে নানারকম ভার্চুয়াল ফসল ফলানো যায়, গরু-ছাগল-মুর্গি ইত্যাদি পালন করা যায়; ক্যাফে ওয়ররল্ড এ নিজের ক্যাফে খুলে সেখানে নানারকম রান্না করে বিক্রি করে ক্রেতাদের খাওয়ানো যায়; আর ফিশভিলে নিজের অ্যাকুয়ারিয়মে নানারকম মাছ চাষ করা যায়। বলাই বাহুল্য , চাষের ফসল-ফল-ফুল, ক্যাফের খাবারদাবার এবং অ্যাকুয়ারিয়মের মাছ, সবই বিক্রয়যোগ্য। বিক্রি টাকা রোজগার করে আবার নতুন বীজ কিনে চাষ, বা নতুন খাবার তৈরি করা যায়। এইভাবেই পয়েন্ট বাড়ানো, লেভেল বাড়ানো, নিজের খামারের বা ক্যাফের আয়তন এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি...। -সমস্ত ধাপগুলিই ভার্চুয়াল, তবে কেউ যদি অত্যধিক উতসাহি হন, তাহলে চটজলদি লেভেল বাড়ানোর জন্য গেমগুলির মালিক জিঙ্গা কে সত্যি সত্যি টাকা দিয়ে একলাফে অনেক ধাপ পেরিয়ে যেতে পারেন।
আমার অত টাকা নেই, তাই আমি ভার্চুয়াল টাকা পয়সার ওপরই নির্ভরশীল। তাই ব্যবহার করে করেই আপাতত আমি একখানা বেশ বড়সড় খামারের মালিক। তাতে নেই নেই করে দুটি বাড়ি, একগাদা গরু-ভেড়া-ছাগল-হাঁস-মুর্গি -কি নেই!! সেই খামারে আমি ইচ্ছামত ধান-গম-ভুট্টা-আঙ্গুর-স্ট্রবেরি-কুমড়ো-আরো কত কি দেশি-বিদেশি ফসল ...যখন যেমন খুশি চাষ করতে পারি। আবহাওয়া-রোদ-জল-মেঘ-বৃষ্টি-মাটি- গ্রামীণ ব্যাঙ্ক...কিছু নিয়েই চিন্তা ভাবনা করতে হয়না। আমি বাঙ্গাল। আমার কোন 'দেশের বাড়ি' নেই বলে মনে খুব দুঃখ । কিন্তু আপাততঃ আমার এদেশি কিছু বন্ধুদের মত বিঘে বিঘে জমির মালিক না হওয়ার এবং rootless হওয়ার দুঃখ ঘুচে গেছে । আমি আমার খামার সম্পর্কে ভয়ানক যত্নশীল। ফসল লাগিয়ে সময়মত সেগুলিকে কেটে ফেলি। পারতপক্ষে আমার ফসল নষ্ট হয়না। যে এক-দুইবার হয়েছে, আমি মনে মনে খুব কষ্ট পেয়েছি।
একইরকমভাবে আমি আমার ক্যাফে এবং আমার অ্যাকুয়ারিয়মকেও খুব ভালোবাসি। সময়মত উনুন থেকে না সরালে রান্না করা খাবার নষ্ট হয়ে যায়। ঠিক সময়ে খেতে না দিলে ছোট মাছগুলি মরে যায়। খাবার বিক্রি করে পয়সা জমিয়ে জমিয়ে আমি আমার ক্যাফেটাকে বেশ বড় বানিয়ে ফেলেছি। সেটাকে মনের মতন করে সাজিয়েছি। অ্যাকুয়ারিয়মটাকেও নানারকমের গাছপালা দিয়ে সাজিয়েছি।
খেলতে শুরু করার সময়েও ভাবিনি আমি এত বেশি উতসাহিত হয়ে পড়ব গেমগুলিকে নিয়ে। আজকাল দিনের প্রায় বেশ কিছুটা সময় এই খেলাগুলির পেছনে চলে যায়। নিজেই নিজের উতসাহ দেখে অবাক হয়ে যাই। ভেবে দেখেছি, আমার এই গেমগুলিকে ভাললাগার এবং ভালবাসার মূল কারণ হল এই গেমগুলির বিশেষ চরিত্র। এই গেম গুলির মজা হল, এগুলি কোন লড়াই, দৌড়, শত্রুপক্ষ ধ্বংস, অজানা গ্রহের ভয়ঙ্কর প্রানী, কামান , গোলাগুলি, রক্তপাত ইত্যাদি নিয়ে নয়। বরং বাগান ভরা সবুজ ফসল ফলিয়ে নিজের অন্যঅন্য খেলুড়েদের সংগে এক সুস্থ এবং পসিটিভ খেলায় মেতে ওঠা। এই খেলাগুলিতে অন্য খেলুড়েরা শত্রু নয়, তারা হল 'পড়শি' [neighbor]। পড়শির সঙ্গে আর কে লড়াই করে? বরং, এই খেলাগুলিতে পড়শিকে সাহায্য করে টাকা এবং পয়েন্ট পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে তাদেরকে নানা জিনিষ উপহার দেওয়া যায়, তাদের কাছ থেকে নানা উপহার পাওয়াও যায়। সব মিলিয়ে এক উষ্ণ, বন্ধুত্বপূর্ণ, গঠনমূলক পরিবেশ - আমাদের চেনা পরিচিত, বহুল প্রচলিত গেমিং কনসোল এর টান টান উত্তেজনার থেকে বহুদূর। আর সেইজন্যই বোধ হয়, ফার্মভিল পৃথিবীর জনপ্রিয়তম অনলাইন গেমগুলির মধ্যে একটি। এই মূহুর্তে সারা পৃথিবীর 68,075,283 জন মানুষ নিয়মত ফার্মভিল খেলেন। সেইসব মানুষদের মধ্যে আমর মত বহু মানুষও আছেন নিশ্চয়, যারা কোন এক সময়ে কোন রকম গেমস খুলেও দেখতেন না। বেশ কিছুদিন আগে জাপানে নির্মিত একটি গেম সম্বন্ধে জানতে পেরেছিলাম, যেখানে একজন মা এবং তার দুই কিশোরী মেয়েকে খেলুড়ে [রা] একলা বা একসাথে ধর্ষণ করতে পারে। এই গেমটি আমাজম ডট কমে বিক্রি করা হচ্ছিল, কিন্তু আমাজন সেটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিছুদিন আগে খবরে শোনা গেছিল এই গেমটি ভারতে চোরাপথে বিক্রি হচ্ছে। এইরকম গেম নাকি জাপানে খুব জনপ্রিয় এবং অনেক তৈরি হয়। এই ধরনের গেম যখন তৈরি এবং বিক্রি হয়, তখন নিশ্চয়ই এইধরনের গেমের নিজস্ব বাজার আছে। কিন্তু আমার মত একজন সাধারন, শান্তিপ্রিয়, জীবনমুখী মানুষের কাছে, এহেন সুস্থ ভাবনা চিন্তার পরিপন্থী গেমগুলির থেকে ফার্মভিল বা ফিশভিল কিন্তু চারিত্রিকভাবে অনেকাংশে এগিয়ে।
একটি ব্রতকথা নিয়ে দু-চারটি আরো কথা
- Category: অনুধ্যান
সপ্তাহ খানেক আগে, গত শনিবার, ছিল কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা। বেশিরভাগ বাঙালি হিন্দু পরিবারের মত আমার বাড়িতেও এই পুজো হয়। পুজোর অঙ্গ হিসাবে মন্ত্র এবং পাঁচালীর সঙ্গে থাকে ব্রতকথা পড়ার নিয়ম। ব্রতকথা হল সাধারনতঃ একটি অলৌকিক গল্প, যেখানে সাধারন মানুষের নানা সমস্যা এবং তার সমাধানের মধ্যে দিয়ে আরাধ্য দেব-দেবীর মাহাত্ম্য প্রচার হয়। এইসব ব্রতকথা একসঙ্গে করে “মেয়েদের ব্রতকথা” বা “বারোমাসের ব্রতকথা” – এই ধরনের নাম দিয়ে সঙ্কলন আকারে প্রকাশ করা হয়।
আমাদের বাড়ীর পুজোয় দুটি ব্রতকথা বলা হয়। তার মধ্যে একটি পড়া হয়ে এই ধরনের একটি বই থেকে; অন্যটি আমার ঠাকুমার স্মৃতি-নির্ভর। দুটি গল্পই নানারকমের বাঁক ঘুরে শেষ অবধি মা লক্ষ্মীর ক্ষমতা ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করে। মুশকিল হল, গল্পের ফাঁক-ফোকর এত বেশি যে, আমরা যারা পড়ি এবং শুনি, তারা প্রতিবারই পাঠ চলাকালীন নানাবিধ যুক্তি এবং প্রশ্ন খাড়া করি- শেষ অবধি ব্যাপারটা হাসাহাসি করে শেষ হয়। এতে মা লক্ষ্মী রেগে যান, না কি অবোধ সন্তান বলে আমাদের মাপ করে দেন ঠিক জানিনা, তবে প্রতি বছরই একই ব্যাপার ঘটে আমাদের বাড়ীর পুজোয়।
অপু-দুর্গার পুজো
- Category: পাঁচমিশালি
মহালয়ার ভোরবেলা অ্যালার্ম বাজিয়ে চারটের সময় ঘুম থেকে উঠে, ধূপ জ্বালিয়ে, ল্যাপটপ খুলে মহিষাসুরমর্দিনীর সিডি চালিয়ে দিলাম। প্রত্যেক বছরের মতই ভাবলাম, এইবার পুরো অনুষ্ঠান শুরু থেকে শেষ অবধি শুনবো। আমার সিডি টা ভিডিও সিডি। তাতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় যখন উদাত্ত স্বরে শোনা যায় "যা দেবি সর্ব্বভূতেষূ --- " তখন স্ক্রিনের ওপর পাটের চুল দাড়ি লাগানো বরষীয়ান অভিনেতা মনু মুখার্জীকে দেখা যায় চট দিয়ে তৈরি স্টুডিওর কুঁড়ে ঘরে বসে সেই বজ্রগম্ভীর কন্ঠের লিপ দিচ্ছেন। মাঝে মাঝে নীল আকাশ, কাশ ফুল, দুর্গার মুখ, নৃত্যরতা মহিলা, লালপেড়ে শাড়ী পরা বাঙালিনী --- আমার ভালো লাগে না। কিরকম যেন মনে হয় একটা অপার্থিব ঘটনাকে জোর করে টেনে নামিয়ে আনা হচ্ছে। 'মহিসাষুরমর্দিনী' দেখার নয়, শোনার, অনুভব করার ---অন্ধকার ঘরে বালিশ আঁকড়ে বিছানায় শুয়ে নিজের অজান্তেই রোমাঞ্চিত হওয়ার --- এক বিশেষ অভিজ্ঞতা।
Morning Surprise
- Category: Life and Times
"Hello, am I speaking to Mahasweta?""Yes""Well Mahasweta, I am a friend of yours....""err..ok...""So how are you?""May I know your name please?""My name? Do you really need to know it?""Yes, it will be nice if you say...""What if I do not tell you my name?"
Welcome to Sajjanpur
- Category: Film Reviews
Today I got the chance to watch Welcome to Sajjanpur. Today's Sunday, I had no engagement, wanted to have some good time, and by chance browsed through the newspaper to know that the film was to be aired on Zee cinema ar 8 p.m.I am really thankful that though the film had been released last year, I did not read any review of the film till date. I only had a vague idea that Welcome to Sajjanpur is a low-budget [?] film which was supposed to be a well-made one, [some critic had dedicated a couple of lines in praise of the film in some different context] and had Amrita Rao in the cast.
Page 6 of 7