ছোট্টবেলায় ইচ্ছে ছিল হব ভাগ্নে মদন,
মামার সাথে সকাল সকাল হাঁকিয়ে গোরুর গাড়ি ,
গ্রাম-গঞ্জের হাটে হাটে ধুলো মাখা গায়ে ,
বেচব গিয়ে বোঝাই করা মাটির কলসি হাঁড়ি।

কখনও বা মন চেয়েছে সেই মেয়েটা হতে -
শীতের রোদে দেয় যে মেলে বেগনি রঙের শাড়ি,
বনবাসী হয়ে নিজের কুঁড়ে বাঁধার আশায় ,
বাগান কোণে ইঁট সাজিয়ে ঘরসংসার গড়ি।

জিয়ল গাছের বেড়া যে ঠিক দেখতে কেমন হয়?
আকন্দফুল সাজায় নাকি ফুলদানিতে কেউ?
চন্দনী গাঁ ঠিক যে কোথায়, বলতে পারবে তুমি?
হাঁটুজলের নদীতে কি নেচে ওঠে ঢেউ?

মাদারতলা আঁধার হলে দেখতে কেমন লাগে?
উস্রি নদীর ঝর্না দেখতে আমরাও কি যাব?
লাগবে কেমন তুলতে পারলে খেয়াল মত দেয়াল?
স্টীমার চেপে পুজোর ছুটি কাটাতে বেরোব?

ছিঁড়ে যাওয়া মেঘের থেকে কেমনে রোদ পড়ে?
চাঁপা হয়ে ফুটলে যদি কেউ তুলে নেয় আমায়?
জোড়াদিঘির মাঠে বুঝি সত্যি ডাকাত আসে?
বিদেশ ঘুরে অনেক দূর টা ঠিক কতদূর হয়?

প্রশ্নগুলির জবাব দিতে ফেরেনি আব্দুল;
বইয়ের তাকে সারে সারে বাঁধাই মেটে মলাট;
বড় হয়ে যাওয়া খুকির বুড়ো বুকের মাঝে,
তবু লুকিয়ে থাকে আজও প্রথম সহজ পাঠ ।

ফেলে এসে চেনা গাঁ-গঞ্জ-পাহাড়-মাঠ-আর-নদী ,
মানিয়ে-মেনে-হিসেব কষে দিনযাপনের ফাঁকে-
নড়বড়ে এই কলকাতাতে উন্মনা অতিথি
চাঁদ ধরতে চাওয়া খুকি , সুখ খুঁজতে থাকে।

৬ই মে, ২০১৭ অন্যনিষাদ ওয়েব পত্রিকার কবিপক্ষের জন্য লেখা।